পানির জন্য নগরবাসীর বাড়তি ব্যয়, ভোগান্তি

সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিতের দাবি ক্যাবের

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৮ মে, ২০২৩ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

নগরীতে সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটি। গতকাল রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতারা এ দাবি জানান। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহসভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু ও দক্ষিণ জেলার সভাপতি আবদুল মান্নান।

বিবৃতিতে বলা হয়, তাপদাহে দেশ পুড়ে যাচ্ছে। এ সময় পানির চাহিদা যখন বেড়ে গেল তখন চট্টগ্রাম ওয়াসায় উৎপাদন কমে যাওয়ায় তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। নগরের প্রায় অর্ধেক এলাকায় চট্টগ্রাম ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে মাত্রাতিরিক্ত লবণ পাওয়া যাচ্ছে। ওয়াসার দাবি, কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর অনেক নেমে গেছে। এ কারণে হ্রদের পানি ছাড়া হচ্ছে না। এর প্রভাবে হালদার পানিতে লবণাক্ততা বেড়েছে। কর্ণফুলী নদীতে শ্যাওলা জমা, কাপ্তাই হ্রদে পানি কমে যাওয়া, কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে সমুদ্রের পানি প্রবেশের কারণে ওয়াসার পানির উৎপাদন কমে গেছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এ সংকটের সমাধান হবে না। এছাড়া হালদার পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় শেখ রাসেল ও মোহরা পানি শোধনাগার থেকে চট্টগ্রাম ওয়াসার উৎপাদন অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এই অবস্থায় একদিকে পানির জন্য হাহাকার, অন্যদিকে মানুষ সুপেয় পানি পাচ্ছে না।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সুপেয় পানির জন্য মানুষকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বেসরকারি পানি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে কিনে পান করতে হচ্ছে। দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি না পাওয়ায় মানুষের ভোগান্তির মাত্রা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। শুরু থেকেই ওয়াসা লবণাক্ততার বিষয়টি গোপন করে এসেছে। শুষ্ক মৌসুমে চট্টগ্রামের ওয়াসার পানিতে লবণের বিষয়টি দুয়েক বছর আগেই আঁচ করা গিয়েছিল। যার খেসারত এখন জনগণকে দিতে হচ্ছে। লবণাক্ততা ও পানির সংকটের কারণে নগরের একতৃতীয়াংশ মানুষ ভোগান্তিতে আছে বললেও প্রকৃত অর্থে এই সংকটে অর্ধেকের বেশি নগরবাসী কষ্ট পাচ্ছে।

ক্যাব নেতারা বলেন, নগরবাসী বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ওয়াসার লবণাক্ত পানি নিয়ে ভোগান্তিতে আছেন। পানি পরিশোধন করলেও লবণ যাচ্ছে না। অনেক জায়গায় নালার দুর্গন্ধযুক্ত, ময়লা ও কালো পানি পাচ্ছেন নগরবাসী। কেউ দূরদূরান্তের পুকুর ও গভীর নলকূপ থেকে পানি সংগ্রহ করে আনছেন। কেউ পানি কিনে রান্না ও খাওয়ার কাজ সারছেন। গোসলসহ অন্যান্য কাজ করতে পারছেন না। ওয়াসার বেশিরভাগ লাইন পুরনো হওয়ায় এমনিতেই সংকটে থাকতে হয় গ্রাহকদের।

লাইনে লিকেজের কারণে পানি নষ্ট হয় উল্লেখ করে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, এখন সংকট আরও প্রকট হয়েছে। ওয়াসা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দায় সেরেছে। কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। বরং নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ ও পানির মূল্য বাড়াতে নতুন পরিকল্পনায় ব্যস্ত। সংকটে কারো তৎপরতা দৃশ্যমান না হওয়া হতাশাজনক। এমন নাজুক পানি সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে নগরবাসী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। মানুষ ওয়াসার পানি সরবরাহ নিয়ে ভুক্তভোগী হচ্ছে। নিরাপদ পানি সংগ্রহে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আগে থেকে লবণাক্ততা পরিশোধনে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি থেকে রেহাই পেত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডুলাহাজারার রিজার্ভ পাড়া খোদ বনবিভাগের ‘মাথা ব্যথা’র কারণ
পরবর্তী নিবন্ধযুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩৯ নেতাকর্মী কারাগারে