যেদিকে দেখা যায় কেবল থৈথৈ জলরাশি। প্রায় জায়গার রাস্তা সমূহে যানবাহনগুলো বিকল হয়ে আছে। পথচারিরা নিদিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছার জন্য ছটফট করছে। কারোবা অফিস সময় পেরিয়ে যাচ্ছে কারো আবার পরীক্ষার তাড়া। কেউবা আবার পানিতে জলমগ্ন থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাঁচানোর জন্য ছুটছে। কোনো কোনো জায়গায় একতলায় বাসা বাড়া থাকা পরিবারগুলোর চোখে জল, এবার বুঝি তাদের খাট, চেয়ার, বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পানি থেকে আর বাঁচানো সম্ভব হলোনা৷ প্রতিবছর বর্ষা এলেই এমন চিত্র চট্টগ্রামের জন্য যেনো নিয়তি। স্মরণাতীতকাল থেকেই দেশের অর্থনীতিতে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। আর এমন একটা শহরের এমন বেহাল দশা সত্যিই দুর্ভাগ্য জনক। জনসংখ্যার চাপে চট্টগ্রাম নগরীকে হয়তো পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি কিন্ত এতোদীর্ঘকাল ধরে বর্ষা এলেই একটি শহর কীভাবে পানির নিচে ডুবে থাকে? এসব যারা দেখভালের দায়িত্বে আছেন তাদের বিবেক কী মরে গেছে? চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি বড় প্রকল্পের কাজ চলছে শুনে আসছি সেই ২০১৮ সালের প্রথম থেকেই কিন্তু সেই প্রকল্পের কাজ যেনো আর শেষই হতে চাচ্ছেনা। প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কিন্তু তারা তাদের দায়িত্ব কতটুকু পালন করছে জনসাধারণ প্রশ্ন তুলেছেন।
একটি প্রকল্পের কাজ ৫ বছরের অধিক সময় করেও সে প্রকল্পের সুফল যদি মানুষ সিকিভাগও না পায় তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় কী করছে সিডিএ?
চট্টগ্রাম শহরে পানি আটকে থাকার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এবার এতোবেশি পানি উঠেছে যে চট্টগ্রাম শহরে লাখলাখ মানুষ পানিবদী হয়ে আছে। অনেকেই ঘর থেকে বেরই হতে পারছেনা। অনেকেই রান্নাবান্না পর্যন্ত করতে পারছেনা শুকনো খাবার খেয়ে দিননিপাত করছে। প্রকৃতপক্ষে এতোবড় একটি বৃহৎ প্রকল্পের কাজ দ্রত শেষ করতে হলে মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, এবং সিডিএ‘র সমন্বয় থাকা জরুরি। সমন্বয় না থাকলে কাজের গতি এবং স্বচ্ছতা নিয়ে যে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে। তাছাড়া প্রকল্পটির কাজের অগ্রগতি বিষয়ে মাঝে–মাঝে জনগণকে অবহিত করা দরকার। এতে করে জনগণের মাঝে এ বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকবে না।এতো দীর্ঘদিন পর্যন্ত একটি প্রকল্পের কাজ চলার পরও জনগণ এর সুফল না পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই চট্টগ্রামবাসীর মনে ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করবো মাননীয় মেয়র এবং সিডিএ কর্তৃপক্ষ সমন্বয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করবেন। তাছাড়া চলমান প্রকল্পটির কাজ দ্রুত শেষ করার মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসী এ দুর্ভোগ থেকে বাঁচাবেন।