টানা ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পানিবন্দি হয়ে আছে কয়েক হাজার পরিবার। ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। এছাড়া সড়ক যোগাযোগেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণকে।
মীরসরাই : মীরসরাই প্রতিনিধি জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি হয়ে আছে মীরসরাইয়ের সহস্রাধিক পরিবার। সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েকদিনে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে উপজেলার খৈয়াছরা, মীরসরাই, মঘাদিয়া, মিঠানালা, করেরহাট, হিঙ্গুলী, বারইয়ারহাট পৌরসভা, মীরসরাই পৌরসভার নিম্নাঞ্চল, জোরারগঞ্জ, কাটাছরা, দুর্গাপুর, ওসমানপুর ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। গ্রামীণ সড়কেরও বেহাল দশা। তলিয়ে গেছে মীরসরাই– মলিয়াইশ সড়ক, বড়তাকিয়া–দুয়ারু সড়ক সহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাট। পানিবন্দি হয়ে আছে ফেনাপুনি, ওসমানপুরের মরগাং।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, ইতোমধ্যে খৈয়াছড়া ইউনিয়নে পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আবারো মানবিক খাবারের উদ্যোগ নেয়া হবে।
ফটিকছড়ি : ফটিকছড়ি প্রতিনিধি জানান, পাহাড়ি ঢলে বিপদসীমার কাছাকাছি পানি অতিবাহিত হচ্ছে হালদা নদীর ফটিকছড়ি অংশে। নদীতে বিলীন হয়েছে নাজিরহাট পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের মালেকার পাড়ার অন্তত ১০০ মিটার রাস্তা এবং নদীর পাড়। স্থানীয়রা বলছেন, পুরো সড়ক এবং পাড় ভেঙে গিয়েছে। যেকোনো সময় পানি ঢুকে যেতে পারে। ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে মালেকার পাড়া (দাশ পাড়ার) ২–৪টি মন্দিরসহ অন্তত ১৫০ বসতবাড়ি।
এছাড়াও ফটিকছড়ি ধুরুং খাল, সর্তা খাল, গজারিয়া খালসহ সবগুলো নদী, খাল, শাখা খালের পানি বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। বিবিরহাটে হাতির পুল ছড়ার পানি ডাকবাংলো রাস্তার ২ ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বিবিরহাট বাজারের ওই এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
হাটহাজারী : হাটহাজারী প্রতিনিধি জানান, ভারী বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে রোপা আমন। পানির কারণে উপজেলা সদরের সাথে বেশ কিছু এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ হাটহাজারীর বিভিন্ন ইউনিয়নে হালদা নদী, স্থানীয় খাল ও ছড়ার জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। উপজেলার পূর্ব ফরহাদাবাদ, পূর্ব ধলই, সেকান্দরপাড়া, পূর্ব এনায়েতপুর, মাইজপাড়া, গুমানমর্দ্দন, বালুখালী, চারিয়া সিকদার পাড়া, রুদ্রপুর, জাফরাবাদ, ভাগিরঘোনা, মোজাফফরপুর, রহিমপুর, মেখল ইউনিয়নের পূর্বাংশ, ভবানীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ মাদার্শা, মাধ্যম মাদার্শা, শিকারপুর, বুড়িশ্চর এলাকায় বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। সরকারহাট, পেস্কারহাট, সরকারহাট নাঙ্গলমোড়া, মেখল চাড়া বটতলা নূর মোহাম্মদ সড়ক, ফতেয়াবাদ সাইনবোর্ড, আজিজিয়া মজিদিয়া সড়কের সাথে উপজেলা সদরের সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। মোহাম্মদপুর এলাকার লোকজন নৌকা ও বাঁশের ভেলার মাধ্যমে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করছে। প্রবল বর্ষণের কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।