টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু নদী ফুলেফেঁপে বান্দরবান শহর পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কিছু কিছু জায়গায় পাহাড় ধসের কারণে জেলা থেকে উপজেলা ও দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিডিনিউজ জানায়, এই অবস্থায় বান্দরবান ‘কার্যত বিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়া জেলা শহরের অনেক মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে হোটেলে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। জেলার কোথাও কোথাও শনিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। জেলা শহরে রোববার থেকে কোনো বিদ্যুৎ নেই। ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় যোগাযোগের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে।
এদিকে লামা প্রতিনিধি জানান, ৮ থেকে ১০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে লামা বাজার। বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে বিধস্ত হয়েছে অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি।
সোমবার রাতে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তফা জাবেদ কায়সার বিডিনিউজকে বলেন, আলীকদম–লামা হয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া পর্যন্ত সড়কে বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। ফলে ওইসব এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শহর থেকে চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির পথে কোনো যানবাহন চলছে না। এ ছাড়া রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ির পথেও যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। আলীকদমের স্থানীয় সংবাদকর্মী সুশান্ত তঞ্চংগ্যা রাতে বলেন, শনিবার থেকে সেখানে কোনো বিদ্যুৎ নেই। মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহা. আবুল মনসুর বলেন, ‘সদর ও বলিপাড়া ইউনিয়নে মোট পাঁচটি কালভার্ট পানিতে তলিয়ে গেচ্ছে । দুর্যোগে প্রশাসনিকভাবে সেবা দেওয়ার জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
আমাদের লামা প্রতিনিধি জানান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, উপজেলায় মোট ৫৫ টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সময়ে ভারি বর্ষন অব্যাহত আছে। মাতামুহুরী নদীর পানি লামা বাজার পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।