খাগড়াছড়ি-পানছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলকারীরা চরম দুর্ভোগে পরেছে। ভাঙা সড়কটি চলাচল করার মতো উপযোগী নয়। একাধিকবার কাজের মেয়াদ বাড়ানোর পর কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদার। ঠিকাদার লাপাত্তা থাকায় মেয়াদ শেষ হলেও সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সংস্কার না হওয়ায় তা চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পরেছে। এতে দুর্ভোগে পরেছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
এই সড়কে প্রতিদিন চলাচল করছে ৭ শতাধিক পন্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন। সড়কের অসংখ্য ছোট বড় গর্ত মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। বেশীরভাগ অংশ চলাচলের অনুপযোগী। কোথাও কোথাও সড়কের চিহ্নও নেই। পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।
সড়কের বেহাল দশার কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছে উপজেলার লক্ষাধিক বাসিন্দা। আগে জেলা সদর থেকে পানছড়ি পৌছাতে আধা ঘন্টা সময় লাগলে রাস্তা ভাঙা হওয়ায় এখন লাগছে দেড় ঘন্টা।
পানছড়ির স্থানীয় বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম মিঠু বলেন, পুরো সড়কটিতে গাড়ি চালানো কোন উপায় নেই। মাত্র ২৪ কিলোমিটার সড়কে যাতায়াত করতে সময় লাগে দেড় ঘন্টার বেশি। একবার রাস্তায় চলাচল করলে অসুস্থ হয়ে যায়। একাজের ব্যর্থতা সওজ এর। সড়কের ছোট গর্তগুলো ভরাট করলেও এতো ভোগান্তি থাকত না। ছোট ছোট গর্তগুলো এখন বড় হয়ে গেছে।
পানছড়ি সড়কে চলাচলকারী ইলিয়াস, তারেকসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, সড়কটিতে এখন চলাচলের কোন সুযোগ নেই। পুরো সাড়ে ২৫ কিলোমিটার সড়কের সাড়ে ২০ কিলোমিটারই ভাঙা। মোটরসাইকেলও চালানোর মতো ব্যবস্থা নেই। একটা অসুস্থ রোগী নিয়ে গেলে রাস্তায় মারা যাবে।
দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। পানছড়ির লতিবান ইউনিয়নের বাসিন্দা পিপলু চাকমা বলেন, একটি গর্ত পার করলে সামনে আরো ১০টি গর্ত পরে। আমাদের দুর্ভোগের সীমা নাই। দ্রুত রাস্তা ভালো করা হোক।
জানা যায়, খাগড়াছড়ি-পানছড়ি ২৫ কিলোমিটার সড়ক সংষ্কারের জন্য ২০২৩ সালে দরপত্র আহ্বান করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। আবেদ মনসুর কন্সট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেলেও তা বাস্তবায়ন করছে এমদাদ পাটোয়ারি নামে এক ব্যক্তি। তবে কয়েক মাস যাবত সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের ফোনই ধরছে না ঐ ঠিকাদার। বর্তমানে তিনি লাপাত্তা না রয়েছেন।
এদিকে পানছড়ি সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ করতে না পারায় ব্যর্থতার জন্য খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর পদত্যাগ চেয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোন ছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজন চাকমা বলেন, ঠিকাদার নিয়োগের পর সড়কটির নির্মাণ শেষ করা যায়নি। এরজন্য নির্বাহী প্রকৌশলী অদূরদশিতাকে দায়ী করব। এটি খুব গুরত্বপূর্ণ সড়ক। হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। পুরো রাস্তাটি ভেঙে চৌচির হয়ে গেছে। একটা অসুস্থ মানুষ এই রাস্তা দিয়ে এ্যাম্বলেন্সে করে গেলে সে মারা যাবে। অবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কার না করলে আমরা কর্মসূচি পালন করব।
খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, যে ঠিকাদারকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সে কাজ করতে পারেনি। তাকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও কোন জবাব পাওয়া যায়নি। ইতোমধ্যে দরপত্র বাতিল করার প্রধান প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না পারায় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে শর্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।