চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন আয়োজিত তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লিগের মাদারবাড়ি শোভনীয়া ক্লাব এবং সাউথ এন্ড ক্লাবের মধ্যকার সুপার ফোর পর্বের শেষ ম্যাচটি পাতানো বলে স্বাক্ষ্য দিয়েছিলেন অনেকেই। তবে জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের যৌথ সভায় ডিসিপ্লিনারি কমিটি রিপোর্ট দেয়নি বলে ম্যাচটি নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সেদিনের সে যৌথ কমিটির সভা। গত ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সে সভার এক সপ্তাহ না পেরুতেই এবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন জানতে চেয়েছে সেদিনের সে ম্যাচটির বিষয়ে। বাফুফে প্রেরিত সে চিঠিতে ম্যাচটি সম্পর্কে কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বিস্তারিত জানতে চেয়েছে। বাফুফের সে চিঠির সাথে গত ৬ এপ্রিল দৈনিক আজাদীতে প্রকাশিত সংবাদের কপিটাও সংযোজিত করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের চিঠি পাওয়ার পর চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা গতকাল এক অনির্ধারিত সভায় বসেছিলেন। সভায় তারা বাফুফের চিঠির বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সিডিএফএ সভাপতি এস এম শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন তারা প্রাথমিকভাবে একটা আলোচনা করেছেন। এখন জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে বসে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটা ড্রাফট আকারে বাফুফেকে জানিয়ে দেওয়া হবে। এদিকে বাফুফের চিঠি প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের ফুটবলাঙ্গনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন এধরনের চিঠি একটি অভিভাবক সংস্থা হিসেবে বাফুফে দিতেই পারে। তবে যদি জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন একটি কার্যকর সমাধান বের করতে পারতো তাহলে আজ বাফুফের চিঠি নিয়ে আবার বসতে হতো না এই দুই সংস্থাকে। এখন হয়তো আগের সভার সিদ্ধান্তটাকে লিখে পাঠিয়ে দেবে বাফুফের কাছে। তাতে কিন্তু স্বচ্ছতা প্রমাণিত হবে না দেশের ফুটবলের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে চট্টগ্রামের এই দুই সংগঠনের। একটা নেতিবাচক মনোভাব কাজ করবে সব সময়। কারন কোন পক্ষ হয়তো অভিযোগ করেছে বাফুফের কাছে এই বিষয়ে। অথবা বাফুফে হয়তো স্বপ্রনোদিত হয়ে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানতে চেয়েছে। ফুটবল সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এর ফলে সংগঠনের মর্যাদা কিছুটা হলেও ক্ষুন্ন হয়।
গত ২ এপ্রিল তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লিগের সুপার থ্রি পর্বের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল মাদারবাড়ি শোভনীয়া ক্লাব এবং সাউথ এন্ড ক্লাব। ম্যাচটিতে জঘন্য পাতানো খেলেছে দু’দল তেমনটি বলেছিলেন জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি, সাধারন সম্পাদক সহ প্রায় অর্ধ ডজন কর্মকর্তা। কিন্তু ৭২ ঘন্টার মধ্যে ডিসিপ্লিনারি কমিটি রিপোর্ট দিতে পারেনি সে অযুহাতে গত ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের যৌথ সভা কোন ধরনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। আর তাতে পাতানো ম্যাচে অংশ নেওয়া দু’দল যে লক্ষ্যে ম্যাচটি খেলেছিল বলে সন্দেহ করা হয়েছিল তাতে তারা সফল হয়েছে। কারন সুপার থ্রি পর্ব শেষে তিন দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যাওয়ায় আবার অনুষ্ঠিত হবে এই পর্বের ম্যাচগুলো। আর তাতে অপর দল বাঁশখালী উপজেলা ক্রীড়া সংস্থাকে হারিয়ে শোভনীয়া ক্লাব এবং সাউথ এন্ড ক্লাব পরের বিভাগে উন্নীত হবে সে প্রত্যাশায়।
এদিকে ফুটবল সংশ্লিষ্টরা বলছেন বাফুফের এ ধরনের চিঠিতে কোন কাজ হবে বলে তারা মনে করেননা। যে কাজটি একেবারে অংকুরেই শেষ করে দেওয়া যেতো সে কাজটার জন্য এখন বাফুফেকে চিঠি দিয়ে জানতে হচ্ছে। যদিও রেফারী সমিতির কার্যালয়ে জুয়ার আসরে পুলিশের হানা দেওয়ার মত ঘটনার পরও বাফুফে কিংবা বাংলাদেশ ফুটবল রেফারী এসোসিয়েশনের চিঠি দিয়ে সে বিষয়ে জানতে চেয়েছিল। কিন্তু কোন কিছুই হয়নি। তাই এবারেও তেমন কিছু হবে তেমনটি মনে করেন না কেউই। কারন অপরাধ করে পুরস্কৃত হওয়ার সংস্কৃতি যে সংগঠনে রেওয়াজে পরিণত হয়েছে সেখানে বাফুফের এই চিঠি কি আর প্রভাব ফেলবে। হয়তো দু’একদিনের মধ্যে একটি রিপোর্ট লিখে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যেখানে হয়তো বলা হবে কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিংবা ডিসিপ্লিনারি কমিটি রিপোর্ট দেয়নি। তাই বিধি মোতাবেক কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এরপর জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন কিংবা জেলা ক্রীড়া সংস্থা হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে আর অপরাধীরা বুক ফুলিয়ে আরো দ্বিগুন উৎসাহে অপরাধ করে বেড়াবে। কারন তারাতো জানে পুরস্কার তাদের জন্য অপেক্ষা করছে।