কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের আটটি দানসিন্দুক খুলে এবার ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার বেশি টাকা পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ টি এম ফরহাদ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে দানসিন্দুক খুলে গণনার কাজ শুরু হয়। রাতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখানে মোট ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা পাওয়া গেছে।
টাকা ছাড়াও ডলার, পাউন্ড, রিয়াল, দিনার, রিঙ্গিতসহ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। এর আগে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দানবাঙ খোলা হয়েছিল। তখন চার কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এবার টাকা গণনার কাজে মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ কর্মকর্তা, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য কাজ করেছেন। খবর বিডিনিউজের।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এবং পাগলা মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদ, মসজিদ কমপ্লেঙের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এছাড়া জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুস্থদের সহায়তা দেওয়া হয়। টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হবে। পাগলা মসজিদ কমপ্লেঙকে ঘিরে বড় প্রকল্প চলছে। এটি বাস্তবায়ন হলে মসজিদ কমপ্লেঙ আরও দৃষ্টিনন্দন হবে।
সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা পাগলা মসজিদ জেলার অন্যতম ধর্মীয় স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় প্রায় চার একর জায়গা জুড়ে মসজিদটি অবস্থিত। ঐতিহাসিকদের দাবি, প্রায় পাঁচশ বছর আগে বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামে এক ব্যক্তি নদীর তীরে নামাজ আদায় করতেন। পরবর্তী সময়ে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।