প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির ধাক্কা লাগল ক্রিকেটে। পাকিস্তান সুপার লিগের দশম আসরের বাকি অংশ পাকিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সংবাদ বিবৃতিতে গত বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। টুর্নামেন্টের বাকি থাকা ৮ ম্যাচের দিনক্ষণ ও ভেন্যু শিগগিরই জানানো হবে বলছেন আয়োজকরা। ভারত ও পাকিস্তানের চলমান সংঘাতের প্রভাবে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থগিত করে দেওয়া হয় পেশাওয়ার জালমি ও করাচি কিংসের মধ্যকার রাতে অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচ। পরে এক জরুরি সভায় পুরো টুর্নামেন্টই সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরে ভারত–পাকিস্তানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। নানা ঘটনাপ্রবাহের পর বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বেশ কিছু জায়গায় ড্রোন হামলা করে ভারত। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম।
এরপর থেকে আরও নিরাপত্তা শঙ্কায় পড়ে গেছেন পিএসএল খেলতে যাওয়া বিদেশি ক্রিকেটাররা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন তারা। ওই বৈঠকের পরই পেশাওয়ার–করাচি ম্যাচ স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সহসাই বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতির কোনো সম্ভাবনা দেখতে না পাওয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি এড়াতে সতর্কতার অংশ হিসেবে পাকিস্তান থেকে পিএসএল সরিয়ে নিলেন আয়োজকরা। পিসিবির বিবৃতিতে মহসিন নাকভি বলেছেন, রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে আক্রমণ করে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে ভারত। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সবসময়ই খেলাধুলা ও রাজনীতিকে আলাদা রাখার পক্ষে। তবে রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়াম লক্ষ্য করে ভারতের চরম দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষিতে, যা স্পষ্টই পিএসএলকে ব্যাহত করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে, পিসিবি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, বাকি ম্যাচগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেওয়া হবে। বাংলাদেশের নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেনসহ ছয় দলে প্রায় ৪০ জন বিদেশি ক্রিকেটার এবার পিএসএলে অংশ নিয়েছেন। তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই বাকি ম্যাচগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেওয়ার কথা বললেন পিসিবি চেয়ারম্যান। টুর্নামেন্ট সরিয়ে নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত আমাদের স্থানীয় এবং বিদেশি ক্রিকেটারদের, যারা আমাদের সম্মানিত অতিথিও, তাদের ওপর সম্ভাব্য যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত হামলা থেকে সুরক্ষা দিতে নেওয়া হয়েছে। অতীতে বহু প্রতিকূলতা অতিক্রম করে ক্রিকেটের অগ্রযাত্রা ধরে রাখা দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের জন্য ক্রিকেটারদের মানসিক সুস্থতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি ছিল। সূচি অনুযায়ী আগামী ১৮ মে পিএসএলের ফাইনাল হওয়ার কথা। এরপর পাঁচ ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পাকিস্তান যাওয়ার কথা বাংলাদেশের।