পাকিস্তানের বিপক্ষে আফগানিস্তানের অনেক কিছু পাবার ছিল। কিন্তু কিছুতেই ব্যাটে বলে মিলছিল না। ওয়ানডেতে সাত বারের দেখায় পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়–শূন্য ছিল আফগানিস্তান। গতকাল রাতে চেন্নাইতে সে অভাব পূরণ করে নিয়েছে আফগানরা। তাও বিশ্বকাপ মঞ্চে। ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে তারা পাকিস্তানকে। এর আগে ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে হারিয়ে এই বিশ্বকাপেই প্রথম অঘটনের জন্ম দিয়েছিল আফগানিস্তান।
গতকাল আফগানদের পাক ধাঁধার সমাধান খুঁজে দিয়েছেন ১৮ বছর বয়সী তরুণ নূর আহমেদ। মূলত তার ঘূর্ণিতেই পাকিস্তানকে কব্জা করে ফেলে আফগানরা। বাকি কাজটা সেরেছেন দলের ব্যাটাররা। সবমিলিয়ে দুই বিভাগেই অনবদ্য খেলে আফগানিস্তান। তাতে ধরা দিল অধরা সেই জয়। গতকাল সোমবার টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান তুলে পাকিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৪ রান আসে বাবরের ব্যাট থেকে। আফগানিস্তানের হয়ে ৪৯ রানে ৩ উইকেট শিকার করে সেরা বোলার নূর আহমেদ। জবাবে খেলতে নেমে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান তুলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। পাকিস্তানকেই অনায়াসে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো আফগানিস্তান। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে এত রানের লক্ষ্য তাড়া করে এই প্রথম জয় পেল তারা। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান তাড়ায় জয়ের রেকর্ডও গড়েছে আফগানিস্তান।
যেখানে ৮৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন ইব্রাহিম জাদরান। ২৮৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় উড়ন্ত শুরু পায় আফগানিস্তান। রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬০ রান তুলে আফগানিস্তান। ৬৫ রান করে গুরবাজ ফিরলে ভাঙে ১৩০ রানের উদ্বোধনী জুটি।
গুরবাজ ফিফটি করে ফিরলেও ওপেনার ইব্রাহিম হাঁটছিলেন সেঞ্চুরির পথে। তবে হতাশ হতে হয় তাকে। সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে ফিরেছেন সাজঘরে। তিনে নেমে শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাটিং করেন রহমত শাহ। হাশমতউল্লাহ শাহিদিকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে গড়েছেন অবিচ্ছিন্ন ৯৬ রানের জুটি। এই দুইজনই দলকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। রহমতের ব্যাট থেকে এসেছে অপরাজিত ৭৭ রান।
এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও ইমাম–উল–হক। এই দুইজনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৬ রান তুলে পাকিস্তান। ১৭ রান করে ইমাম ফিরলে ভাঙে ৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটি।
এরপর তিনে নেমে দলের হাল ধরেন বাবর। ফিফটি পান এই দুই ব্যাটারই। ৫৮ রান করে ফিরেন শফিক। আর বাবরের ব্যাট থেকে আসে ৭৪ রান। তবে এই দুইজন ফেরার পর খানিকটা হলেও পথ হারায় দল। ব্যর্থ হয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সউদ শাকিলরা। তবে শেষের দিকে ইফতিখার আহমেদ–শাদাব খানের জুটিতে আবারও নিয়ন্ত্রণ নেয় পাকিস্তান। ইফতিখার ও শাদাব সমান ৪০ রান করে করেছেন। তাদের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়েই লড়াই করার পুঁজি পায় পাকিস্তান। ম্যাচ সেরা হয়েছেন আফগানিস্তানের ইব্রাহিম জাদরান। পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান দু’দলই ২টি করে খেলায় জিতে চার পয়েন্ট পেয়েছে।