পাইকারীতে ঊর্ধ্বমুখী চিনির বাজার

দুই সপ্তাহে মণে বেড়েছে ২০০ টাকা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৯ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ

পাইকারীতে বেড়েই চলেছে চিনির বাজার। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে চিনির দাম বেড়েছে মণপ্রতি ২০০ টাকা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চিনির আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। এছাড়া সম্প্রতি আবার বেড়েছে ডিজেলের দাম। ফলে পরিবহন খরচও বেড়েছে। খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে পাইকারীতে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০ টাকা। গত দুই সপ্তাহ আগে যা ছিল ২ হাজার ৮৫০ টাকা। জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের একজন চিনি ব্যবসায়ী বলেন, দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে দেশের শীর্ষ তিন শিল্পগ্রুপ। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম পড়তি দিকে। কিন্তু ডলারের দাম বৃদ্ধি এবং ডিজেলের দাম বৃদ্ধিকে পুঁজি করে চিনির দাম তারা আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচিত হবে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গড়ে তোলা।
অন্যদিকে খাতুনগঞ্জের কয়েকজন চিনি ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়। চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে চিনির বাজার উঠানামা করছে। দেশের বাজারে ডলারের রেকর্ড দাম বৃদ্ধি হয়েছে। ফলে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। কোনো পণ্যের দাম বাড়লে অনেকে সিন্ডিকেট কারসাজির অভিযোগ তুলে। প্রকৃতপক্ষে চিনির বাজারে সিন্ডিকেট কারসাজি বলে কিছু নেই।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চিনির বাজার নিয়ে কারসাজির ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে প্রশাসনের যেভাবে নজরদারি হওয়ার কথা সেভাবে হচ্ছে না। আমাদের দেশে গুটিকয়েক চিনি আমদানিকারক আছে। আসলে সরকারি চিনি কলগুলোর বিপণন অব্যবস্থাপনার কারণে বেসরকারি চিনির আমদানিকারকরা কারসাজি করার সুযোগ পাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানে আগুনে পুড়েছে তিন বসতঘর
পরবর্তী নিবন্ধবৃষ্টির অভাব, ধানের জমিতে হচ্ছে সবজি রোপণ