পাইকারি বাজারে চিনির দামে উত্তাপ

মণপ্রতি বেড়েছে ২০০ টাকা

জাহেদুল কবির | সোমবার , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ

খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে বাড়ছে চিনির দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে প্রতি মণ (৩৭.৩২ কেজি) চিনির দাম বেড়েছে ২০০ টাকা। কেজি হিসেবে বেড়েছে ৫ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম না বাড়লেও দেশের বাজারে চিনির এমন দরবৃদ্ধির কারণে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা। তারা বলছেন, সরকারি চিনির দাম কমানোর পাশাপাশি বেসরকারি চিনির মিল মালিকদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। কারণ পাইকারি বাজারে চিনি আসে বেসরকারি মিল থেকে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় চিনিকলগুলোকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হলে চিনির বাজার স্থিতিশীল হবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৫০০ টাকা। গত দুই সপ্তাহ আগে সেই চিনি বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৩০০ টাকায়। অপরদিকে নগরীর খুচরা বাজারগুলোতে সেই চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৩০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ’। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্য ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন আজাদীকে বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চিনির বাজার ঊর্ধ্বমুখী। চট্টগ্রামের চেয়ে ঢাকায় দাম আরো কিছুটা বেশি। আসলে চিনির সরবরাহ ঘাটতির কারণে দাম বাড়ছে। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমে যাবে।

ইমরান হোসেন নামের এক ভোক্তা জানান, আমাদের দেশে হাতেগোনা কয়েকটি গ্রুপ চিনির পরিশোধন ও বিপণনের সাথে জড়িত। সরকার চাইলে এসব কোম্পানিকে নজররদারির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সেসবের কিছুই হচ্ছে না। প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করার সুযোগ পাচ্ছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে সম্প্রীতি সমাবেশে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত
পরবর্তী নিবন্ধভিডিও দেখে দোষীদের শনাক্ত, গ্রেপ্তারে অভিযান