পাইকারি বাজারে আলু সংকট

| মঙ্গলবার , ২০ অক্টোবর, ২০২০ at ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

আলু নিয়ে কারসাজি তৈরি হওয়ায় সরকার নির্ধারিত মূল্য বেঁধে দিয়েছে ১২ অক্টোবর। আর এতেই বেকে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। সরকারি মূল্যের এক সপ্তাহ পার হতে চললেও গতকাল সোমবারও সেই নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হচ্ছে না খুচরা, পাইকারি কিংবা কোল্ডস্টোরেজে। নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি করলে বড় অঙ্কের লোকসানে পড়তে হবে, এমন শঙ্কায় কোল্ডস্টোর থেকে আলু ছাড়া হচ্ছে না। সেখানে থেকে আলু না আসায় রাজধানীর পাইকার বাজারের সব আড়তেই ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে আলুর মজুদ। অন্যদিকে খুচরা বাজারেও রয়েছে আলুর সংকট। আজ মঙ্গলবারের মধ্যে পাইকার বাজার থেকে আলু সংগ্রহ করতে না পারলে তাদের মজুদও শেষ হবে। এমন অবস্থায় আবারও দাম বাড়তে পারে এমনটা শঙ্কা ক্রেতা সাধারণের। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই সব সমস্যার সমাধান আসতে পারে, এমন আশ্বাস দিলেন ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডেপুটি পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। তার মতে, কোল্ডস্টোর থেকে আলু না ছাড়লে নিলাম বা সিলগালা করার সুযোগ রয়েছে। খবর বাংলানিউজের। ১৯ অক্টোবর রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। আর পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা কেজি দরে। যদিও ২২টি আড়তে মধ্যে মাত্র তিনটিতে আলু রয়েছে তাও আবার পর্যাপ্ত না।
আলু ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি করলে বড় অঙ্কের লোকসানে পড়তে হবে ব্যবসায়ীদের। তাই সরকারি দাম পুনর্বিবেচনা করে ৩৫ টাকা করারও প্রস্তাব অনেক ব্যবসায়ীর। আড়তদাররা বলছেন, মুন্সিগঞ্জ জেলায় কোল্ডস্টোর পর্যায়ে আলুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৩৫ টাকা, যেটা আড়তে আসতে আরও দুই টাকা খরচ পড়বে। আমি বেশি দামে বিক্রি করলে জরিমানা গুনতে হবে। আবার দাম কম বললে কোল্ডস্টোর থেকে আলু দেয় না। আমরা কী বিক্রি করবো, কোথায় যাবো? কারওয়ানবাজার আড়তদার আফজাল বলেন, আলুর দাম পুনঃনির্ধারন করা হলে কোল্ডস্টোর থেকে আলু পাওয়া যাবে। এখন বাজারে আলু নাই হয়তো যাদের আছে তারা আবারও দাম বাড়িয়ে দিতে পারেন। তাজুল নামে অপর ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের মনে হয় আলুর দাম ৩৫ টাকা নির্ধারন করলে সমাধান হবে। এবার ত্রাণে আলুর ব্যবহার ছিলো, বন্যায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে সব মিলে সংকট আছে। রাজধানীর পাইকার বাজারের মতো অধিকাংশ খুচরা বাজারে আলু সংকট রয়েছে। মালিবাগ বাজারের বিক্রেতা সুমন বলেন, আমাদের দোকানে আলু নেই বললেই চলে, কারওয়ানবাজারে আলু আজও আসেনি। আগামীকালের মধ্যে আলু বাজারে না এলে আবারও অনেক বেশি দাম বেড়ে যাবে। শঙ্কা তৈরি হয়েছে ক্রেতাসাধারণের মধ্যেও। তাদের মতে, আলু নৈরাজ্যের সমাধান না হলে মধ্যবিত্তদের অবস্থা আরও খারাপ হবে। এর আগে গত বুধবার প্রতিকেজি আলুর দাম হিমাগারে ২৩ টাকা, পাইকারিতে ২৫ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৩০ টাকা কেজিদরে বিক্রি নিশ্চিত করতে সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। একইসঙ্গে উল্লেখিত দামে কোল্ডস্টোরেজ, পাইকারি বিক্রেতা ও ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা বিক্রেতাসহ তিন পক্ষই যাতে আলু বিক্রি করেন, সেজন্য কঠোর মরিটরিং ও নজরদারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে ডিসিদের কাছে পাঠানো হয়েছে চিঠি। চিঠিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে গত আলুর মৌসুমে প্রায় ১ দশমিক ৯ কোটি মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। দেশে মোট আলুর চাহিদা প্রায় ৭৭ দশমিক ৯ লাখ মেট্রিক টন। এতে দেখা যায় যে, গত বছর উৎপাদিত মোট আলু থেকে প্রায় ৩১ দশমিক ৯১ লাখ মেট্রিক টন আলু উদ্বৃত্ত থাকে। কিছু পরিমাণ আলু রপ্তানি হলেও ঘাটতির আশঙ্কা নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেবী মুক্তির ২ বছর পূর্তি!
পরবর্তী নিবন্ধ‘প্রায় তৈরি’ হয়ে গেছে গুগল অ্যাসিস্টেন্টের ড্রাইভিং মোড