পশুর হাটের ক্রেতা বিক্রেতারাই অপরাধীদের টার্গেট

নগরের ১২টি হাটের নিরাপত্তায় ৩ হাজারের অধিক পুলিশ

ঋত্বিক নয়ন | শনিবার , ১৫ জুন, ২০২৪ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

কোরবানির ঈদকে ঘিরে নগর জুড়ে ওঁৎপেতে আছে মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ও জাল টাকার কারবারীরা। মূলত পশুর হাটের ক্রেতাবিক্রেতারাই তাদের প্রধান টার্গেট। ইতোমধ্যে এ মৌসুমী অপরাধীদের দৌরাত্ম্য প্রতিরোধে র‌্যাব পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামলেও তাদের হাতে ধরা পড়ছে মাঠ পর্যায়ের অপরাধীরা। পালের গোদারা ঠিকই অধরা রয়ে যাচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ মনে করছেন, মানুষের সচেতনতাই পারে অপরাধ কমিয়ে আনতে। অপরাধ সংঘটনের পরপরই সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব। নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ মৌসুমী অপরাধ ও অপরাধীদের সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলা ও নগর এলাকায় মোট ২৪৮টি পশুর হাটে এবার কোরবানির পশু কেনাবেচা চলছে। এর মধ্যে স্থায়ী ৭২টি এবং ১৭৬টি অস্থায়ী পশুর হাট।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আলমামুন বলেছেন, রোজার ঈদে একমুখী চাপ থাকে। কিন্তু কোরবানির ঈদে সাধারণত যেটা ঘটে সেটা হচ্ছে, ঘরমুখো মানুষের চাপ সড়কে যেমন থাকে তেমনি, পশুবাহী ট্রাকপিকআপও চলাচল করে। অর্থাৎ মানুষ বাড়ি যায়, গরু আসে। সড়কে দ্বিমুখী চাপ মোকাবিলা করতে হয়। পুরো বিষয় বিবেচনায় রেখে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও সঠিক রাখার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে কোনো গরুবাহী গাড়ি কেউ থামাতে পারবে না। এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশসহ পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা সজাগ রয়েছে। আইজিপি বলেন, গরুর হাটে গরু কিনতে গিয়ে কেউ যদি হয়রানির শিকার হন তাহলে পুলিশকে জানান। প্রয়োজনে ৯৯৯এ কল করে জানান, পুলিশ তড়িৎ ব্যবস্থা নেবে। নৌপথে ও সড়ক পথে কোরবানির পশুবাহী গাড়ির সামনে ব্যানারে লেখা থাকতে হবে কোন হাটে যাবে। তাহলে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হবে। কেউ সমস্যায় পড়লে আর পুলিশকে দ্রুত জানালে আমরাও দ্রুত সহায়তা করতে পারব।

কোরবানির ঈদে পশুর হাটগুলোর নিরাপত্তা বিষয়ে সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১২টি পশুর হাটে ৩ হাজারের অধিক পুলিশ সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। ব্যবসায়ীরা টাকা আনা নেওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যরা সহযোগিতা করবেন। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ, নগর বিশেষ শাখার সদস্য ছাড়াও র‌্যাব, আর্মড পুলিশ রয়েছে। প্রত্যেক হাটে সিএমপির কন্ট্রোল রুম আছে। সিসিটিভি আছে। জালনোট সনাক্তকরণের মেশিন ও ভেটেরিনারি ভিজিল্যান্স টিম (পশু চিকিৎসক) দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া অজ্ঞান পার্টি মলম পার্টির কবল থেকে ক্রেতা বিক্রেতাদের রক্ষার জন্য বেশ কিছু সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে জেলার পশুর হাটে নিরাপত্তা এবং পশুবাহী পরিবহনে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার এস. এম. শফিউল্লাহ বলেন, প্রত্যেক পশুর হাটে আমাদের লোকজন আছে। হাটে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জালনোট সনাক্তকরণ মেশিন বসানো হয়েছে। জেলা পুলিশের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম আছে। আমাদের পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে জেলায় কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটে। ঈদে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া সড়কে কোনো গাড়ি তল্লাশি করা হবে না বলেও ঘোষণা দেন এস. এম. শফিউল্লাহ। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা থানা পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, তিন শিফটে আমাদের তিন হাজার পুলিশ সদস্য চব্বিশ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছেন। হাইওয়ে পুলিশও আমাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ এখন ১৯ বিলিয়নের ঘরে
পরবর্তী নিবন্ধ২শ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে কক্সবাজার থেকে জাহাজ গেল সেন্টমার্টিন