পশুর চামড়া সংরক্ষণে বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ দেবে সরকার

২০ কোটি ২৫ লাখ টাকার এ লবণ পাবে মাদ্রাসা ও এতিমখানা

| বৃহস্পতিবার , ২২ মে, ২০২৫ at ৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, কোরবানির পশুর চামড়াকে এতিমের হক বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তাই চামড়ার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে এবং এটি সঠিকভাবে সংরক্ষণে সারাদেশের মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন মাঠ পর্যায়ে প্রতিমণ লবণের দাম ২৭০ টাকা। সেই হিসেবে ৩০ হাজার টন লবণের বর্তমান বাজার মূল্য ২০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। গতকাল বুধবার মন্ত্রিপরিষদ গঠিত ‘কোরবানির সম্পর্কিত বিষয়াদির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ কমিটির’ বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। খবর বিডিনিউজের।

এবারে কোরবানির ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ধরা হয়েছে ৭ জুন। গতবারের তুলনায় এবার পশুর চামড়ার দাম কিছুটা বাড়বে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, কোরবানির ব্যবস্থাপনা ও চামড়ার সঠিক মূল্য নিশ্চিতের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এই কোরবানির চামড়া এতিমের হক। এটাকে সর্বোচ্চ মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য যা যা করা দরকার করতে হবে। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আজকে সর্বাধিক সংখ্যক উপদেষ্টার উপস্থিতিতে আমরা কোরবানির পশুর ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলাপ করেছি। কোরবানির চামড়া এতিমের হক, এর যেন উপযুক্ত মূল্য নির্ধারিত হয়। সারাদেশের মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোতে বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ সরবরাহ করব। যাতে করে যতক্ষণ পর্যন্ত চামড়া বিক্রি না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত যেন চামড়া সংরক্ষিত থাকে।

কোরবানি পরবর্তী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। নির্ধারিত স্থান বা হাট ছাড়া অন্য কোথাও যেন কোরবানির পশুর হাট যাতে না বসে সেদিকে সতর্ক করেছেন শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, কোরবানির পশুর হাটে যে হাসিল উত্তোলন করা হয় সেটাকে যেন ৫ শতাংশের কম রাখা হয়। ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণের জন্য যদি কাচা চামড়া সরাসরি রপ্তানি করলে ভালো হয় আমরা তাই করবো। যদিও আমরা চাইনা এমনটি ঘটুক।

বৈঠক শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, এবারের বিশেষ ব্যবস্থায় যাতে কোরবানির পশু পরিবহন করা যায় সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে। স্থলপথ নৌপথের পাশাপাশি ট্রেনের ব্যবস্থাও যেন থাকে। প্রাণিকল্যাণ আইন মেনে চলতে হবে। পারিবহনের সময় যাতে কোনো পশুর ওপর নিষ্ঠুরতা করা চলবে না।

বাণিজ্য উপদেষ্টাকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটিতে আছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলাবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশো চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তারা। বৈঠকে অধিকাংশ উপদেষ্টাই উপস্থিত ছিলেন। হেফাজতে ইসলামীর নেতা মামুনুল হকও কমিটির সদস্য হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতৈলারদ্বীপে টেক্সি-কার সংঘর্ষ, চিকিৎসকসহ আহত ৫
পরবর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই ডাকাত দলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১