পলাতক ফুল

আনোয়ার হোসেন পিন্টু | শুক্রবার , ২৩ মে, ২০২৫ at ৭:১৬ পূর্বাহ্ণ

উৎসর্গ

আমার জ্যেষ্ঠ বন্ধু কবি ও প্রবীণ সাংবাদিক স্বপন দত্ত

আমার বাগানে ফুল নেই।

এখন বিকল্প শুধু তৃতীয়বার ক্ষীণ জ্যোৎস্না

যার খেই মিলেও মেলে না। অথবা কোথাও আছে

দৃশ্যের গভীরে কিংবা হৃদয়ের নৈঃশব্দ্যের কাছে।

কিছু স্মৃতি কিছুবা বিস্মৃতি;

থাকা বা না থাকা অতি প্রাজ্ঞ সময়ের রীতি

না মেনেই চাওয়াপাওয়া, লাভফাঁকি,

রৌদ্রছায়া কি অবিকল।

রাতের জঠরে বাড়ে সকালের ভ্রুণ। বয়ে যায় ছলচ্ছল

অন্ধকার নদীর জীবনের অনির্দিষ্ট মোহনার দিকে।

নতুন প্রান্তরে তার অস্তিত্বের নাম লিখে লিখে।

সবুজের বুকচেরা বনগুচ্ছ তাকেই তো বলি

ফুলদোপাটি, মালতি, চাঁপা, ডালিয়া,

নামেরই তো ভেদ শুধু। যে নামেই ডাকো তাকে,

নিরাসক্ত অপলক মুখ। তোড়াবাঁধা কাগজের ফুল। চেয়ে থাকে

তারপর একদিন জমাট ব্যর্থতা কাটে। দূরেঅতি দূরে

নামহীন সৌরলোকে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে তারকার বুক

ঘুরে ঘুরেযত খড়খুটো ভিখারী বালক হয়ে নাচে

বেহিসাবি ঝড়ে। মুহূর্তের ফ্রেম ভাঙে অভিমানী ছবির বাগান।

সাড়া দেয় নড়ে চড়ে, দুলে ওঠে শাখা ও প্রশাখা।

অকালবৃষ্টির তোড়ে ছিলনেই ভেদাভেদ মুছে যায়।

ফাঁকা বুক ভরে ওঠে অজস্র অচেনা ঘ্রাণে।

ভেসে যায় শূন্যতার ঝাঁক ভরা কোটালের বানে।

তখন পাতারা প্রসাধিত অজস্র সবুজ ফুল

যাকে ডেকে ডেকে সারা। কত না বিনিদ্র রাত,

সতর্ক পাহারা। যার জন্য জীবনের দীর্ঘ পর্যটন

সমস্ত সঞ্চয় নিয়ে অপেক্ষার দীর্ঘ সিঁড়ি ভাঙা

দূর দিগ্ববলয় প্রসারিত যার দুটি হাতে

ঘরেফেরা পাখির সবুজ ডানা। কাছে আসে

ভোরের আকাশ হয়ে প্রসন্ন উদ্ভাসে।

রাতের পাহাড় ভেঙে যে জাগাল উদার প্রত্যাশা

সেই কি আমার রিক্ত বাগানের পলাতক ফুল?

নাকি যার নাম অন্ধ ভালোবাসা?

পূর্ববর্তী নিবন্ধফটিকছড়ির রাঙ্গামাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ
পরবর্তী নিবন্ধরবীন্দ্রসাহিত্যে বিজ্ঞানচেতনা ও ড. সানাউল্লাহ আল-মুবীনের গবেষণা