বড়দিনসহ টানা তিন দিনের ছুটিতে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি পর্যটকে মুখরিত হয়ে উঠেছে। জেলার আলুটিলা, রিছাং ঝরনা, জেলা পরিষদ র্পাকসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে অন্তত ২০ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেছে বলে জানান পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
পাহাড়, অরণ্য, ঝিরি–ঝরনা ও উপত্যকা নিয়ে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি। সারা বছর পর্যটক আসলেও এবার টানা তিন দিনের ছুটিতে খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের সমাগম বাড়ছে। হোটেল মোটেলের সব কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।
গতকাল রোববার সকালে খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটন কেন্দ্র আলুটিলায় চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক তানভীর ও সোহেলের সাথে কথা হয়। তারা বলেন, আমরা প্রতিবছর অফিসিয়াল ট্যুরে বেড়াতে আসি। এবার আসলাম খাগড়াছড়িতে। এখানে এসে মুগ্ধ হয়েছি। আলুটিলা অনেকগুলো নতুন স্থাপনা হয়েছে। এর মধ্যে নন্দন পার্ক, ঝুলন্ত ব্রিজ খুব ভালো লেগেছে। ঢাকার ধানমন্ডি থেকে স্বপরিবারে বেড়াতে এসেছে ফরিদা আলম।
তিনি বলেন, তিন দিনের ছুটিতে খাগড়াছড়িতে বেড়াতে এসেছি। শনিবার সাজেকে ছিলাম। আজকে এখানে আসলাম। আলুটিলার মূল আকর্ষণ রহস্যময় সুড়ঙ্গ। অন্যরকম রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়েছে। এছাড়া পুরো পর্যটন কেন্দ্রটি অসাধারণ সুন্দর।
খাগড়াছড়ির অন্য আরেকটি পর্যটন কেন্দ্র জেলা পরিষদ পার্কের মূল আকর্ষণ ঝুলন্ত ব্রিজ। পার্কের মূল ফটকে কথা হয় রাজশাহী থেকে বেড়াতে আসা আনিস, লিটন ও সোহাগের সাথে। তারা জানান, শীতের সময় আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরতে যাই। খাগড়াছড়ি ও সাজেক বেড়ানো শেষ। এখান থেকে
রাঙামাটি হয়ে কঙবাজার যাব। এটা আমাদের প্রথম পাহাড় ভ্রমণ। এক কথায় দারুণ ছিল।
অতিথি বাড়ায় খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক কোকোনাথ ত্রিপুরা জানান, সাপ্তাহিক ছুটির পাশাপাশি বড়দিনকে কেন্দ্র করে সবাই তিনদিনের ছুটি পেয়েছে। শুক্র ও শনিবার আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে অন্তত দশ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেছে। এতে সরকারি রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
খাগড়াছড়িতে আবাসিক হোটেল ও মোটেলের সংখ্যা ৩০। শুক্রবার থেকেই প্রতিটি হোটেলের কোনো কক্ষই খালি নেই। খাগড়াছড়ির বেসরকারি আবাসিক হোটেল গাইরিং’র ব্যবস্থাপক প্রান্ত বিকাশ ত্রিপুরা জানান, শীত মৌসুমে খাগড়াছড়িতে পর্যটক সমাগম থাকে। এবার তিন দিনের ছুটি পাওয়ায় আগে থেকেই সব কক্ষ বরাদ্দ হয়ে গেছে। অনেক অতিথিকে রুম দিতে পারিনি। খাগড়াছড়ির সব হোটেলের একই অবস্থা। আগে থেকেই রুম বরাদ্দ না দেওয়ায় অনেক পর্যটক ফিরে গেছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক জানান, পর্যটকদের বাড়তি নিরাপত্তার জন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পুলিশের মোবাইল টিম রয়েছে। সবগুলো কেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।