পর্যটকের চাপে কক্সবাজার ‘হাউসফুল’

শীত মৌসুম ও টানা ছুটি

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শনিবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ

একদিকে শীতকালীন পর্যটন মৌসুম, অন্যদিকে টানা তিন দিনের সরকারি ছুটি। আর এই সুযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অবকাশ যাপনে কক্সবাজারের দিকে ছুটে আসছে হাজার হাজার ভ্রমণপিপাসু। ইতিমধ্যে পর্যটকের চাপে শহরের হোটেল-মোটেলগুলো হাউসফুল। রোববার পর্যন্ত আগাম বুকিং হয়ে গেছে হোটেলের সকল কক্ষ।
হোটেল মালিকরা জানান, প্রতিবছর দুই ঈদ এবং থার্টিফার্স্টের ছুটিতে কক্সবাজারে সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। এসময় হোটেল-মোটেলে শতভাগ রুম বুকিং থাকে। গত ঈদ ও থার্টি ফার্স্টের ছুটিতেও প্রত্যাশিত সংখ্যক পর্যটক এসেছে কক্সবাজারে। সে সময় হোটেল-মোটেলে ছিল উপচে পড়া ভীড়। তবে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিবসে সেই ভীড় নেই বলে জানান বাংলাদেশ ট্যুরিজম সার্ভিসেস এসোসিয়েশন কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার।

তিনি জানান, কক্সবাজারের প্রায় ৫শ হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসে প্রায় দেড় লাখ পর্যটকের রাত যাপনের সুবিধা রয়েছে। শুক্রবার থেকে রোববার (২৩ থেকে ২৫ ডিসেম্বর) পর্যন্ত প্রায় শতভাগ কক্ষ আগাম বুকিং হয়েছে। গত শুক্রবার-শনিবার (১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর) শহর ও সাগরপাড়ের প্রায় সব হোটেলেই শতভাগ কক্ষ ভাড়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে- আগামী ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বরও শতভাগ কক্ষ বুকিং হবে। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে, শীত বাড়ার সাথে সাথে দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারে ছুটে আসছে ভ্রমণপিপাসুরা। সপরিবারে অথবা বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন মিলে বেড়াতে আসছে সাগরপাড়ে। বর্তমানে পর্যটকদের আনাগোনায় শহরের রাস্তাঘাটে লেগে যাচ্ছে ট্রাফিক জ্যাম। গতকাল শুক্রবার সরকারি ছুটিরদিনে কক্সবাজারে প্রায় দেড় লাখ পর্যটক এসেছে বলে জানান হোটেল মালিকরা।
কলাতলী-মেরিন ড্রাইভ হোটেল-রিসোর্টস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে প্রায় শতভাগ কক্ষ বুকিং যাচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য দিনগুলোতেও ৫০% বেশি কক্ষ ভাড়া হচ্ছে। আর শুক্রবার থেকে আগামী রোববার (২৩ থেকে ২৫ ডিসেম্বর) পর্যন্ত কোনও কক্ষ খালি নেই।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে কক্সবাজারে পর্যটক বাড়তে থাকলেও শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে উপচে পড়া ঢল। হোটেল-মোটেলে রুম পাওয়া এখন দুষ্কর।
তিনি জানান, পর্যটকেরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, বার্মিজ মার্কেট, শুটকীপল্লী, হিমছড়ি, ইনানী ও টেকনাফ সমুদ্র সৈকত ছাড়াও জাহাজে সেন্টমার্টিন দ্বীপে এবং স্পিডবোটে সোনাদিয়া দ্বীপে ভ্রমণে যাচ্ছে। আর কেউ কেউ ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, রামু বৌদ্ধ মন্দির ও মহেশখালী আদিনাথ মন্দির পরিদর্শনে যাচ্ছে। পাশাপাশি ঘুরতে যাচ্ছে কক্সবাজারের পাশ্ববর্তী পার্বত্য বান্দরবান জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে। টুরি‌্যস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, পর্যটকদের চাপের কথা মাথায় রেখে কক্সবাজারের রাস্তাঘাটে এবং পর্যটন স্পটসমূহে ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল বাড়ানো
হয়েছে। এছাড়া শহরের কলাতলী থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সৈকতে গ্রহণ করা হয়েছে দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, কক্সবাজারে পর্যটকেরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের বিচকর্মীরা দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতও সক্রিয় রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরে বিএনপির গণমিছিল আজ
পরবর্তী নিবন্ধকিছু দেশ থেকে ভারতে যেতে কোভিড নেগেটিভ সনদ বাধ্যতামূলক হচ্ছে