পরীর পাহাড় নাম ব্যবহারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা

| বৃহস্পতিবার , ১১ নভেম্বর, ২০২১ at ৭:১৬ পূর্বাহ্ণ

আজাদী প্রতিবেদন ম ‘কোর্ট হিল’কে পরীর পাহাড় হিসেবে লিখা, বলা, প্রচার এবং পত্র বিনিময় করা যাবে না মর্মে অন্তর্বর্তীকালিন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার প্রথম সিনিয়র সহকারী জজ (ভারপ্রাপ্ত) ইসরাত জাহানের আদালত আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে দেওয়ানী কার্যবিধির ১৫৩ ধারায় করা একটি আবেদনের উপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
জেলার প্রধান আইন কর্মকর্তা (জিপি) নাজমুল আহসান খান আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কোর্ট হিলকে পরীর পাহাড় বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, এমন অভিযোগে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সমিতির পক্ষ থেকে করা মামলায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করা হয়। এতে তিনদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। এতো অল্প সময়ে নোটিশের জবাব দেয়া সম্ভব নয়, তাই বিবাদীদের পক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করা হয়। আদালত সেটি মঞ্জুর করে আগামী ৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দিন বলেন, বিবাদী পক্ষে সময়ের আবেদন করায় আমরা অন্তর্বর্তীকালিন নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করি। আদালত সেটি মঞ্জুর করেন। তিনি আরও বলেন, নোটিশের জবাব না দেয়া পর্যন্ত এবং এ বিষয়ে শুনানি পূর্বক আদেশ না দেয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালিন এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
চট্টগ্রামের ‘আদালত ভবন’ খ্যাত ‘কোর্ট হিল’কে পরীর পাহাড় হিসেবে প্রচারণা না চালাতে দেওয়ানী কার্যবিধির ১ নম্বর আদেশের ৮ নম্বর বিধিমতে প্রতিনিধিত্ব আকারে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান ও জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে গত রোববার প্রথম সিনিয়র সহকারী জজ (ভারপ্রাপ্ত) ইসরাত জাহানের আদালতে এ মামলা করে জেলা আইনজীবী সমিতি। অন্য দু’জন হলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল হাসান ও বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আতিকুর রহমান।
ওইদিন আদালত শুনানি শেষে কেন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে না, তা বিবাদীদের কাছে জানতে চান এবং তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, আইনীভাবে স্বীকৃত ও বহুল প্রচারিত ‘কোর্ট হিল’কে পরীর পাহাড় হিসেবে লিখা শুরু করেছেন বিবাদীরা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ আগস্ট সিডিএকে দেয়া একটি পত্রে ‘কোর্ট হিলে’র জায়গায় পরীর পাহাড় উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত পত্রের উপর সিডিএ ‘কোর্ট হিল’কে পরীর পাহাড় লিখে গত ১৭ আগস্ট জেলা প্রশাসন বরাবর একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। যেখানে সরকারের কোনোরূপ সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন ব্যতিরেকে সিডিএ সচিবকে প্রভাবিত করে ‘কোর্ট হিলে’র জায়গায় পরীর পাহাড় লিখতে বাধ্য করা হয়।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, একটি কাল্পনিক ইস্যু সৃজন করে শত বছরের স্বীকৃত ঠিকানা ‘কোর্ট হিল’ কিংবা ‘আদালত ভবন’ মুছে বা বাদ দিয়ে কল্পিত পরীর পাহাড় নামক সাইন বোর্ড কোর্ট হিলের চতুর্দিকে স্থাপন করতে শুরু করেন বিবাদীরা। এমনকি বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাকে পরীর পাহাড় লিখতে বাধ্য করছেন বিবাদীরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভিড়ের চাপ, ভোগান্তি
পরবর্তী নিবন্ধফ্লাইওভারটি দেখতে যাওয়ার দরকার নেই