মাদক সেবন করে নির্যাতনের অভিযোগে চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার বাসার এক গৃহকর্মী। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালতে মামলা করেন পিংকি আক্তার নামের ওই নারী, যিনি পরীমনির হাতে মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগ নিয়ে গত ৪ এপ্রিল থানায় গিয়েছিলেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আগামী ৮ মে’র মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। মামলায় পরীমনির সাথে একই ফ্ল্যাটে বসবাসরত সৌরভ (২৮) নামের এক ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
বাদীপক্ষের আইনজীবী নাসিদুস জামান নিশান মামলা দায়েরের তথ্য নিশ্চিত করেন। পিংকি আক্তার নেত্রকোণো জেলা সদরের মৌগাতী ইউনিয়নের ফাদুলিয়া গ্রামের মো. মোজাম্মেলের মেয়ে। গত ৪ এপ্রিল ভাটারা থানায় গিয়ে পিংকি অভিযোগ করেন, বাচ্চা পড়ে যাওয়ায় পরীমনি তাকে মারধর করেছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেওয়ার কথা সেদিন বলেছিলেন ভাটার ওসি মো. মাজহারুল ইসলাম।
ওইদিন মধ্যরাতে ফেসবুক লাইভে এসে পরীমনি তার বিরুদ্ধে ওঠা গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগকে ষড়যন্ত্র বলেন। হাতে প্রমাণ থাকায় সমস্ত অভিযোগ আইনি প্রক্রিয়ায় মোকাবিলা করার কথাও বলেছিলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ হওয়ায় ক্ষুব্ধ পরীমনি সংবাদমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ বন্ধের তাগিদ দেন।
মঙ্গলবার আদালতে করা মামলায় পিংকি আক্তার অভিযোগ করেছেন, কাদের এজেন্সি নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২৪ সালের মার্চে তিনি পরীমনির বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন। একটি বাচ্চাকে দেখাশোনার দায়িত্ব নিতে তাকে নিয়োগ দেওয়া হলেও তাকে দুটি বাচ্চার দায়িত্ব পালন করতে হতো। এছাড়াও দিনে–রাতে বাসার রান্নার কাজও করতে হতো বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ২ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে পরীমনি তার মেকআপ রুমে গিয়ে মাদক গ্রহণ করেন। পরে বাচ্চার রুমে এসে পিংকি আক্তারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। গালিগালাজ কেন করছেন, জানতে চাইলে পরীমনি বলেন, তুই আমার বাচ্চার জন্য দুধ কেন তৈরি করছিস, এখন ওকে সলিড খাবার দিবি। পিংকি বলেন, বাচ্চার খাওয়ার রুটিন অনুসারে এখন দুধ খাওয়ানোর কথা, তাই আমি দুধ তৈরি করেছি।
এসময় পরীমনি ক্ষিপ্ত হয়ে মাথায়, মুখে ও চোখে এলোপাতাড়িভাবে চড়–থাপ্পড় মারলে একপর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করেছেন পিংকি আক্তার। সে সময় সৌরভও সেখানে উপস্থিত ছিলেন দাবি করে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সৌরভ পিংকিকে নির্যাতনের জন্য পরীমনিকে উৎসাহিত করতে থাকেন সে সময়। এতে আরও বলা হয়েছে, পরে পিংকি ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে যান এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনায় পিংকি আক্তার ৪ এপ্রিল ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। কিন্তু কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন।