চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ মোহাম্মদ ওয়াসিম অনার্স তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস ফলাফল আসার ২ মাস ২৩ দিন আগেই তিনি মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রামে নগরীর মুরাদপুর এলাকায় চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় ওয়াসিম।
আজ (৯ অক্টোবর) বিকেলে ওয়াসিমের সেই ফলাফল সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলেই তাঁর স্মরণে সহপাঠি ও বন্ধুরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রেজাল্টটি পোস্ট করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাবেক সমন্বয়ক (চবি) বর্তমানে স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ কমিটির চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি মো. এনামুল হক।
তিনি জানান, শহীদ ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। যাঁর রোল নম্বর-২২০৮৬৮৫। রেজিস্ট্রেশন নম্বর-১৯২২০২৩৬৮৭৯। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স তৃতীয় বর্ষের ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী শহিদ ওয়াসিম অনার্সে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
গত বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল ১১ টায় কক্সবাজারের পেকুয়ার সদর ইউনিয়নের বাজারপাড়া গ্রামের মেহেরনামা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে চট্টগ্রামে নগরে নিহত চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ওয়াসিম আকরাম (২২) এর তাঁর নামাজ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।
এতে শোকার্ত মানুষের ঢল নেমেছিলো। জানাজা শেষে মুরারপাড়া পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয় শহিদ ওয়াসিম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রবাসী শফিউল আলমের ৫ সন্তানের মধ্যে ওয়াসিম ছিলেন ২য়। তাঁকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন ছিল মা-বাবার। তাকে হারিয়ে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে পরিবারটির। মধুর আচার-ব্যবহারের কারণে গ্রামে সবার প্রিয় ছিলেন মেধাবী এই তরুণ আকরাম।
ওয়াসিম আকরামের চাচা মাওলানা জয়নাল ও এলাকাবাসী জানান, ছোট থেকেই ওয়াসিম ছিলো অত্যন্ত মেধাবী। অসাধারণ ব্যবহারে তার প্রতি সবাই মুগ্ধ ছিল। ওয়াসিম স্থানীয় মেহেরনামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভাল ফলাফল করে। পরে মেহেরনামা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে এসএসসি পাস করেন। তারপর চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে এবং একই কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়ন করেন। বেঁচে থাকলে ওয়াসিম আকরাম জীবনে অনেক বড় হতেন এবং পরিবারসহ এলাকার জন্য যথেষ্ট অবদান রাখতেন বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
প্রসঙ্গত, সারাদেশে ৩৩৯টি কেন্দ্রের ৮৮০টি কলেজের তিন লাখ ৪৪ হাজার ৮০ জন শিক্ষার্থী (নিয়মিত, অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন) এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এ পরীক্ষায় পাসের হার ৯৪ দশমিক ৯০ শতাংশ।