চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ও পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার ভার বিদেশি অপারেটরের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রতিহতের আহ্বান এসেছে এক গোলটেবিল আলোচনা থেকে। আলোচনায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেছেন, বন্দর বিদেশি অপারেটরের হাতে দেওয়া হলে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হবে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সুলতান আহমদ হলে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় এ বক্তব্য এসেছে। ‘বেসরকারি পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল হস্তান্তরের প্রক্রিয়া : সম্ভাবনা ও ঝুঁকি’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে ‘প্রগতির যাত্রী’ নামে একটি সংগঠন। আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর শুধু একটি বন্দর নয়। এর সঙ্গে আমাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব জড়িত। এমন একটি স্থাপনা যারা বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে চান, তারা আর যা’ই হোক দেশপ্রেমিক নয়। বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ‘বন্দরটা নির্দিষ্ট একটা শ্রেণির হাতে জিম্মি হয়ে গেছে ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকে। এখানে টার্মিনাল ও বার্থ নির্দিষ্ট অপারেটর দিয়ে বছরের পর বছর অপারেট করা হচ্ছে। নতুন কেউ যদি কাজ করতে চায়, এমনভাবে অভিজ্ঞতার শর্ত জুড়ে দিচ্ছে, যাতে তারা অংশ নিতে না পারে। জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বন্দর বিদেশি অপারেটরের হাতে দিতে চাচ্ছে, সেটার মধ্যে সদিচ্ছা দেখছি না। যে সক্ষমতার কথা বলা হচ্ছে, সেই সক্ষমতা নিজেদের বৃদ্ধি করে না কেন? দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমেরিকার এস এস এ কোম্পানিকে যখন বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তখন আমরা আন্দোলন করেছিলাম। রক্ষা করেছিলাম সেদিন বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দর নিয়েই বাংলাদেশের অর্থনীতি। রাজনৈতিক কারণে, অর্থনৈতিক ফায়দার জন্য বন্দরকে নিয়ে ব্যবসা করা হলে সেটা সুখকর হবে না। চট্টগ্রামের নাগরিক হিসেবে বন্দরকে দেখভাল করার দায়িত্ব আমাদের সবার।’ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের পোর্টকে ব্যবহার করার জন্য আমেরিকা, ভারত, রাশিয়া সবাই চেষ্টা করছে। এসব নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।’ প্রগতির যাত্রীর সংগঠক নুপুর ধরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন গবেষক–সংগঠক প্রকাশ ঘোষ। আলোচনায় আরও অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল আলম, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, চট্টগ্রামের সভাপতি তপন দত্ত, সাংবাদিক জসিম চৌধুরী সবুজ, হাসান আকবর ও নাজিমউদ্দিন শ্যামল, সংগঠক উৎপল দত্ত, শিক্ষক হোসাইন কবীর। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।