পরিকল্পিত উন্নয়নে জোর দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু : ডিসি

কাল থেকে জিমনেসিয়াম মাঠে দুই দিনব্যাপী মেলা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৬ মার্চ, ২০২১ at ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ

অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি সামাজিক সকল খাতে বাংলাদেশের অর্জন ঈর্ষণীয়। এমজিডির সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় এসডিজি তথা টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রাতেও আমরা ভালো ফল লাভ করছি। শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি, জন্মহার, উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধাসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে সার্ক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। কেবলমাত্র শ্রীলংকা সামাজিক সূচকে আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব দেশকে এই মর্যাদার আসনে আসীন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল বাংলাদেশ’ উত্তরণ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম জাকারিয়া ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনি আক্তার।
জেলা প্রশাসক বলেন, বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে প্রতিফলিত হয়েছে। বিগত একযুগ ধরে আমরা গড়ে ৭ শতাংশের উপরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। ফলে বাংলাদেশের জিডিপির আকার বর্তমানে ৩২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোভিড-১৯ পরিস্থিতেও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মাঝে সবচেয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি (৫.২৪ শতাংশ) অর্জন করেছে। রেমিটেন্স অর্জন বিষয়ে তিনি বলেন, গত অর্থবছরে ১৯.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স অর্জন করেছে দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ প্রায় ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি বলেন, জাতির পিতা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন পরিকল্পিত উন্নয়নের ওপর। বাংলাদেশে পরিকল্পিত অর্থনীতির ভিত নিহিত আছে সংবিধানের ১৫নং অনুচ্ছেদে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় ৭৪ লাখ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়েছে। ব্যাপক শিল্পায়নের ফলে জিডিপিতেও শিল্প খাতের অবদান ১১.৫ শতাংশ থেকে ২৯.১৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প, এমআরটি-৬ প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল, পায়রা সমুদ্রবন্দর, রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট, রামপাল কয়লা-বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতারবাড়ি কয়লা-বিদ্যুৎ ইত্যাদি মহাপ্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। এসব প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়ন এগিয়ে চলছে মহাকর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) কর্তৃক ত্রিবার্ষিক মূল্যায়নের পর স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ লাভ করেছে। তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়। এ তিন বিষয় হলো- মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক (যা পুষ্টি, স্বাস্থ্য, মৃত্যুহার, স্কুলে ভর্তি ও শিক্ষার হারের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়), অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক (যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক আঘাত, জনসংখ্যার পরিমাণ এবং বিশ্ববাজার থেকে একটি দেশের দূরত্বসহ আটটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়)।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব শতবর্ষের মাহেন্দ্রক্ষণে অর্জিত এ অর্জন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নতুন প্রজন্মকে উৎসর্গ করেছেন উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের গৌরবময় এ অর্জনকে স্মরণীয় করে রাখতে আগামী ২৭ ও ২৮ মার্চ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান এবং মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রায় সকল সরকারি দপ্তরের অংশগ্রহণে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- ‘বাংলাদেশের এক অনন্য অর্জন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শতাধিক সরকারি দপ্তর একই প্রাঙ্গণে সরকারের অর্জন প্রদর্শন করবে। চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে রোড শো, তথ্যচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনী, কুইজ, সেমিনার, উপস্থিত বক্তৃতা, প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিষণ্নতা দূর করতে বাঁশ নৃত্য
পরবর্তী নিবন্ধসুবর্ণজয়ন্তীতে ইমরান খানের শুভেচ্ছা