সহকর্মীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়া, জুয়ারিদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার মত অভিযোগে পুলিশের এক অতিরিক্ত ডিআইজি এবং তিন পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার মিজানুর রহমানের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত করা হয়েছে। অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, পুলিশ সুপার মো. ফজলুল করিম এবং পুলিশ উপ কমিশনার মো. সালাউদ্দিন শিকদারকে করা হয়েছে তিরস্কার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২৭ এবং ৩০ অক্টোবর চারটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ‘দণ্ডাদেশ’ জারি করে, যা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত হয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত চট্টগ্রাম রেঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন তার অধীন এক এসআইয়ের (বর্তমানে পরিদর্শক) স্ত্রীসহ বিভিন্ন নারীর সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়েছেন এবং প্রায় প্রতিরাতে মদপান করে বাসায় ফেরেন বলে পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ আসে। সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি তার স্ত্রীকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন ছাড়াও যৌতুক দাবি করেছেন। এসব অভিযোগে তার স্ত্রী আদালতে চারটি মামলাও করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। পুলিশ সদর দপ্তর তার বক্তব্য শোনে এবং পরে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি তওফিক মাহবুবকে গত জুন মাসে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে দিন মাস তদন্ত করে গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করেন তওফিক মাহবুব। সেখানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা বলা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে নিজ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে এবং সহকর্মীর স্ত্রীকে তালাক প্রদান করিয়ে নিজে বিয়ে করা, পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ ‘সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে’। এ কারণে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তাকে তিরস্কার করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এ বিষয়ে মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেনের বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (এসপি পদমর্যাদা) মিজানুর রহমান দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকাকালে জুয়ারিদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করতেন বলে অভিযোগ এলে পুলিশ সদর দপ্তর তদন্ত শুরু করে। ‘অসদাচরণ ও দুর্নীতির’ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে এক বছরের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত করার দণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়। খবর বিডিনিউজের।