পরকীয়া করে মাকে বিয়ে করায় ভাড়াটে দিয়ে খুন

পটিয়ায় লাশ উদ্ধার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৬ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ

এক সপ্তাহ আগে পটিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে উদ্ধার হওয়া লাশটি ভৈরবের নবী হোসেনের। মায়ের সঙ্গে পরকীয়া করে বিয়ে করায় ক্ষুদ্ধ ছেলে তার দুঃসম্পর্কের চাচা নবী হোসেনকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করে। পরে লাশটি সেখানে ফেলে রেখে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত শুক্রবার রাতে নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ এলাকা থেকে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গতকাল রোববার দুপুরে ওই লাশ উদ্ধার ঘটনার বিষয়ে এমন তথ্য দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই। গ্রেপ্তার দুই যুবক হলেন আশিক মিয়া (২১) ও সুমন মিয়া (২৪)। গ্রেপ্তারের পর আদালতে রিমান্ডের আবেদন করলে আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে জানায় পিবিআই।
পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান জানান, ১৭ অক্টোবর লাশটি উদ্ধারের পর পিবিআই আঙুলের ছাপ মিলিয়ে প্রথমে ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করে। নবী হোসেন নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি ভৈরবের আগানগর ইউনিয়নের পুরানচর এলাকায়। লাশ উদ্ধারের পর নবীর ভাই চট্টগ্রামে এসে লাশ শনাক্ত করেন এবং পটিয়া থানায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পিবিআই স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলার তদন্তভার নিয়ে নরসিংদী থেকে আশিককে ও কিশোরগঞ্জ থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করে। একই সাথে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের হোতা সাব্বির নামে এক যুবক। সে সম্পর্কে নিহত নবী হোসেনের ভাতিজা। তার বাড়িও ভৈরবে। ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে সাব্বির ভাড়াটে খুনি দিয়ে তার দুঃসম্পর্কের চাচা নবী হোসেনকে খুন করায়। সাব্বিরের বাবা প্রবাসী। সে সুযোগে নবী হোসেন তার মায়ের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। সাব্বির বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে নবী হোসেনকে খুনের পরিকল্পনা করে। এজন্য তুষার নামে একজনের সাথে ৬০ হাজার টাকায় চুক্তি করে।
এসপি নাজমুল বলেন, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৫ অক্টোবর মাইক্রোবাসে করে ভৈরব থেকে নবী হোসেনকে অপহরণের চেষ্টা করে পিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার ও পলাতক আসামিরা। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়। প্রথম দিন ব্যর্থ হওয়ায় তারা পরদিন মাইক্রোবাসের পরিবর্তে প্রাইভেটকার নিয়ে নবী হোসেনকে অপহরণ করে।
তিনি বলেন, অপহরণের পর নবী হোসেনকে চট্টগ্রামে আনার পথে কুমিল্লা মহাসড়কে মুখে গামছা বেঁধে গলা টিপে হত্যা করে। এ সময় তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। পরে নবী হোসেনের লাশটি প্রাইভেটকারে নিয়ে কক্সবাজারের দিকে রওনা দেয়। পটিয়ায় মহাসড়কে লাশটি ফেলে দিয়ে খুনিরা কক্সবাজার ভ্রমণ করে ভৈরবে ফিরে যায়।
ওইদিন উদ্ধার করা লাশটির গলায় গামছা পেঁচানো ও পায়ের রগ কাটা ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছিল। এ ঘটনায় অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে ৫৫৮ নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জনের করোনা শনাক্ত
পরবর্তী নিবন্ধই-অকশন যুগে চট্টগ্রাম কাস্টমস