পবিত্র লাইলাতুল কদর আজ। হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ রাত। মহিমান্বিত এ রাত মুমিন মুসলমানের জন্য আল্লাহর দেওয়া সেরা নেয়ামত। যদিও শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলো লাইলাতুল কদর তালাশ করার দিকনির্দেশনা এসেছে, তথাপিও অধিকাংশ মুসলিম ২৬ রমজান দিবাগত রাতটি লাইলাতুল কদর পাওয়ার আশায় যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করেন। সে হিসেবে আজ দিবাগত রাতে পালিত হবে পবিত্র লাইলাতুল কদর।
তারাবিহ নামাজ পড়ার পর থেকে মুমিন মুসলমান সারারাত জেগে লাইলাতুল কদর পেতে ইবাদত–বন্দেগিতে রত থাকে। মর্যাদার এ রাতে পবিত্র কোরআনের বাণী সুরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত নাজিল হয়। আল্লাহ বলেন– ‘হে রাসুল! আপনি পড়ুন! আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।’ (সুরা আলাক : আয়াত ১–৫)। মহিমান্বিত মর্যাদার এ রাতের বর্ণনায় আল্লাহ তাআলা স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করেছেন। আল্লাহ বলেন-‘আমি একে নাযিল করেছি শবে–কদরে। শবে–কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন? শবে–কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।’ (সুরা কদর)
সে কারণেই মুসলিম উম্মাহ হাজার মাসের সেরা রাত লাইলাতুল কদর পেতে আজ দিবাগত রাত ইবাদত বন্দেগিতে রত থাকবে। তারাবিহ, নফল নামাজ, তাহাজ্জুদ, সালাতুল তাসবিহ, জিকির–আজকার, দোয়া–দরুদ পাঠ করবে। গুনাহ মাফ ও রহমত লাভে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধাসমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বলুয়ার দীঘির পাড় খানকা শরীফ : নগরীর বলুয়ার দীঘির পাড়স্থ খানকাহ–এ–কাদেরীয়া ছৈয়্যদিয়া তৈয়াবিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর উপলক্ষে আজিমুশশান মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। রাত ৯ টায় এশা’র নামাজের পর পবিত্র খতম তারাবি নামাজের আখেরী মুনাজাত হবে। পবিত্র কোরআন তেলোওয়াত, পবিত্র নাতে রাসূল (দ.), পবিত্র খতমে গাউছিয়া শরীফ এবং ১২ রাকাত জামাতে পবিত্র লাইলাতুল ক্বদরের নামাজ ও মহামান্বিত রজনীর উপর বক্তব্য রাখবেন বরেণ্য উলামায়ে কেরামগণ। এর পর রয়েছে সালাতু–সালাম বিশেষ মোনাজাত। রাত ২ টায় জামায়াতের তাহাজ্জুতের ১২ রাকাত নামাজ, মিলাদ মাহফিল ও আখেরী মোনাজাত। এ সকল কর্মসূচিতে সকল পীর ভাই–বোন–ভক্ত–অনুরক্তদের যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য খানকায় শরীফের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম দরবার : পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষে চট্টগ্রাম দরবারের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচিতে রয়েছে–কোরআন খতম, যিকির–কিয়াম, ছেমা মাহফিল। রাতে শবে কদরের ফজিলত সম্পর্কে তকরির পেশ করবেন দরবারের সাজ্জাদানশীন ছৈয়দ জাফর ছাদেক শাহ (মাজিআ)। এছাড়া সকল মসজিদ, দরবারে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে। ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে রজনী কাটাবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।