পদ–পদবি ও ব্যক্তিস্বার্থ পরিহার করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক শিক্ষার্থীদের এক পতাকাতলে আসার আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) সাবেক জিএস মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা বিষয়ে মতপার্থক্য আছে। কিন্তু জাতির স্বার্থে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের কল্যাণ, উন্নয়ন ও অধিকারের প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পদ–পদবি ও ব্যক্তিস্বার্থ পরিহার করে এক পতাকাতলে আসতে হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন একটাই। আর সেটি হচ্ছে, সমাজসেবা অধিদপ্তরে ২০২১ সালে নিবন্ধনকৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন। চাকসুর সাবেক সব ভিপি, জিএস এবং দেশবরণ্য ব্যক্তিরা এই এলামনাইয়ের সঙ্গে আছে। সবাই এক থাকলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকটগুলো সমাধান ও উত্তরণ সম্ভব।
গতকাল শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য মাহমুদুর রহমান মান্না এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন নিয়মিত ক্লাস করেছেন উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাকে এখনো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস টানে, ফিরে পেতে চাই–সেই হারানো মধুময় দিনগুলো। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে এলামনাই এসোসিয়েশনে তাকে ডাকা হয়নি। এমনকি তার নাম নিশানা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। চবির সাবেক শিক্ষার্থী ও প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের মূখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া সাথী বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাই এসোসিয়েশনের নেতৃত্ব নিয়ে যে বিভক্তি চলছে, তা এখনই সমাধান হওয়া দরকার। ব্যক্তিস্বার্থ পরিহার করে সাবেক চাকসু ভিপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম ফজলুল হক ও ব্যারিস্টার মুনতাসিম বিল্লাহ ফারুকীর নেতৃত্বে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান মূখ্য সচিব। সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি, সাবেক চাকসু ভিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম ফজলুল হক। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ জাতিকে কোনো শক্তিই পদানত করতে পারে না। একতা মানুষের মধ্যে মহাশক্তির সঞ্চয় ঘটায়, পক্ষান্তরে অনৈক্য ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সবাইকে সমাজসেবা দপ্তরের অনুমোদিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। এলামনাই এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নৌ সচিব মুহাম্মদ ইউসুফ, সাবেক চাকসু ভিপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সহসভাপতি এএম সামশুজ্জামান হীরা, ভিপি মজহারুল হক শাহ চৌধুরী, এডিবির সাবেক পরিচালক ড. মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক চাকসুর জিএস আজিম উদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ সগির আহম্মেদ, মুজতবা কামাল, অধ্যাপক ইউনুচ চৌধুরী, মহিউদ্দিন বাদল, মো. রেজাউল করিম, নাসির উদ্দিন চৌধুরী, সাংবাদিক সালাহউদ্দিন মো. রেজা, অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন, দিদারুল আলম মজুমদার, মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, প্রফেসর আবু তাহের চৌধুরী, শওকত আলী নূর, আকতার কামাল চৌধুরী, ড. নূরী আক্তার, এম.আর মিল্টন, নুরুল আলম কিরণ, যোবাইর হাসান মানিক, আফরোজা লাকী, আমির হোসেন মানু ও অপু বৈদ্য প্রমুখ। বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণার্থে ম্যানটরশিপ, জব ফেয়ার, ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা, দক্ষতা উন্নয়ন ওয়ার্কশপ, বৃত্তি প্রদান, ভৌত আবকাঠামো উন্নয়ন, তথ্য কেন্দ্র, কমর্ফোট সেন্টার, লাইব্রেরি ও গবেষণাগার উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন, এলামনাই অ্যাওয়ার্ডস প্রচলন, ইউনূস চেয়ার প্রবর্তন, সোশাল ব্যবসা প্রশাসন বিভাগ চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।