পদ্মা সেতুর পথ ধরে পর্যটনে নতুন প্রাণের প্রত্যাশা

| শনিবার , ২৫ জুন, ২০২২ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

বর্ষাকাল মানে কুয়াকাটায় পর্যটন ব্যবসার ‘অফ সিজন’, নজরুল ইসলামের ভাজা মাছের টং দোকানে তাই ক্রেতা নেই। তবে তার মন এখন পরিকল্পনা সাজাতে ব্যস্ত। ফ্রিজ কিনতে হবে, দোকানের সাজসজ্জা সুন্দর করতে হবে, আরও বহু কাজ বাকি। পদ্মা সেতু যে খুলে যাচ্ছে! খবর বিডিনিউজের।

কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যারা কোনো না কোনোভাবে জড়িত, তাদের কাছে পদ্মা সেতুর হিসাবটা সহজ। কেবল কুয়াকাটা নয়, সুন্দরবনকেন্দ্রিক ট্যুর অপারেটররাও বলছেন, পদ্মা সেতু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমে পর্যটকদের ভিড় বহুগুণে বাড়বে। ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা নিজেদের মত করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেও সামগ্রিক প্রস্তুতির অনেক কিছুই বাকি। পর্যটকদের মানসম্মত সেবা দেওয়ার মত পর্যাপ্ত অবকাঠামো এখনও গড়ে ওঠেনি। পর্যটন বোর্ডের পরিচালক আবু তাহের মুহাম্মদ জাবেরও তা মানছেন।

তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের প্রস্তুতি না থাকলেও কিন্তু পর্যটকেরা যাচ্ছেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পর্যটকরা ব্যাপকভাবে বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলে যাবেন। এসব জায়গায় সরকার বিনিয়োগ করবে নিশ্চয়, কিন্তু বেসরকারি বিনিয়োগটাকে আমরা বেশি আকৃষ্ট করার চেষ্টা করব। এটাই আমাদের এখনকার মত প্রস্তুতি।’
দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমের ২১ জেলাকে রাজধানী ঢাকা থেকে সড়কপথে আলাদা করে রেখেছিল পদ্মা নদী। সেই নদীর ওপর নির্মিত স্বপ্নের সেতুটি ওইসব জেলায় ভ্রমণ সময় চার থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে ছুটির দিনে যাদের দৌড় ছিল বড়জোড় মাওয়া ঘাটের ইলিশ পর্যন্ত, তারা এখন ছুটির দিনটা কুয়াকাটার সৈকত কিংবা আরও দূরে সুন্দরবনে কাটানোর পরিকল্পনা করতেই পারেন।

আহসান হাবীব একটি সরকারি ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম)। ছুটির দিনে কর্মব্যস্ত শহরের বাইরে গিয়ে গায়ে একটু খোলা হাওয়া লাগাতে পারলে তার ভালোই লাগে।

তিনি বললেন, মাঝে-মধ্যে রাতে বন্ধুদের সঙ্গে মাওয়া যাই। তবে এবার হয়ত কুয়াকাটা কিংবা অন্য কোথাও যেতে পারব। তবে বাড়তি পর্যটকের ভার কুয়াকাটা কিংবা সুন্দরবন কতটা নিতে পারবে, সে চিন্তাও আছে পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের।

বেঙ্গল ট্যুরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ হোসেন তিন দশকের বেশি সময় ধরে পর্যটকদের সুন্দরবন দেখাচ্ছেন। তার সেবাগ্রহীতাদের অধিকাংশই বিদেশি। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিশ্চয় আমাদের অনেক আশা জাগাচ্ছে। আমরা বিদেশি পর্যটকদের সুন্দরবনে নিয়ে যাওয়ার সময় ফেরিঘাট এড়াতে চাই। তাই উড়োজাহাজেই যাওয়া হয় বেশিরভাগ সময়। আবার অনেক পর্যটক আছেন, পদ্মা বা গঙ্গা তাদের কাছে অনেক তাৎপর্য রাখে। তাদের অনেকেই সুন্দরবন থেকে ফেরার সময় ফেরিতে পার হতে চান। এদেশের ঘাটের কর্মচাঞ্চল্যও তাদের জন্য দেখার মত বিষয়। এটা তারা দারুণ উপভোগ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআঞ্চলিক যোগাযোগে বাংলাদেশের নেতৃত্বের আরেকটি দৃষ্টান্ত পদ্মা সেতু : যুক্তরাষ্ট্র
পরবর্তী নিবন্ধউপরে বিএসটিআইয়ের লেভেল ভেতরে ভেজাল তেল