পদ্মা অয়েলে কর্মকর্তাদের মাঝে অসন্তোষ, একজন ওএসডি

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৪ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডে ২১ জন কর্মকর্তা নিয়োগ নিয়ে কর্মকর্তাদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে নিয়োগ কমিটির একজনকে তাঁর দাপ্তরিক পদ থেকে ওএসডি করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলছেন, নিয়োগ নিয়ে অসন্তোষ হয়নি, অপ্রয়োজনীয় বাক্য বিনিময়ের কারণে ওই কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, এর আগে ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি ১১ পদে ২১ জন কর্মকর্তা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে পদ্মা অয়েল কোম্পানি। তন্মধ্যে সিনিয়র অফিসার (প্লানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট) পদে একজন, সিনিয়র অফিসার (ইঞ্জিনিয়ারিং) পদে দুইজন, সিনিয়র অফিসার (প্রকিউরমেন্ট) পদে একজন, সিনিয়র অফিসার (অপারেশন্স) পদে তিনজন, সিনিয়র অফিসার (এস্টেট এন্ড লিগ্যাল) পদে একজন, জুনিয়র অফিসার (সেলস) পদে একজন, জুনিয়র অফিসার (প্রকিউরমেন্ট) পদে একজন, জুনিয়র অফিসার (ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট) পদে একজন, জুনিয়র অফিসার (এইচআর) পদে একজন, জুনিয়র অফিসার (একাউন্টস) পদে দুইজন এবং জুনিয়র অফিসার (রিফুয়েলিং) পদে রয়েছে ৭জন। এসব পদের আবেদনকারীদের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়।
এর মধ্যে সিনিয়র অফিসার (প্লানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট), সিনিয়র অফিসার (ইঞ্জিনিয়ারিং), সিনিয়র অফিসার (অপারেশন্স) এবং জুনিয়র অফিসার (ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট) পদের লিখিত পরীক্ষা হয় বুয়েটে। অন্যদিকে সিনিয়র অফিসার (প্রকিউরমেন্ট), সিনিয়র অফিসার (এস্টেট এন্ড লিগ্যাল), জুনিয়র অফিসার (সেলস), জুনিয়ার অফিসার (প্রকিউরমেন্ট), জুনিয়র অফিসার (এইচআর), জুনিয়র অফিসার (একাউন্টস) জুনিয়র অফিসার (রিফুয়েলিং)- পদে লিখিত পরীক্ষা হয় ঢাকা আজিমপুরের ইডেন মহিলা কলেজে।
জানা যায়, পদ্মা অয়েলে কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন্স এন্ড প্লানিং) মো. আবু সালেহ ইকবালকে আহ্বায়ক এবং উপ-মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) মো. শহীদুল আলমকে সদস্য সচিব করে ৮ সদস্যের একটি নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়। নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে মন্ত্রণালয়ের একজন, বিপিসির একজন এবং যমুনা অয়েলের একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ কমিটিতে রাখা হয়। নিয়োগ কমিটি আবেদনকারীদের কাছ থেকে লিখিত, মৌখিক পরীক্ষা এবং সংশ্লিষ্টদের ফিল্ড টেস্ট নিয়ে গত নভেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে ২১ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে পদ্মা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি এমন কয়েকজনকে নিয়োগের জন্য উচ্চ মহল থেকে চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু উচ্চ মহলের পছন্দের লোকদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ না করায় বিপাকে পড়েন পদ্মা অয়েলের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা। এ নিয়ে পদ্মা অয়েলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে ঊর্ধ্বতন কয়েকজনের বাকবিতণ্ডাও হয় বলে জানা গেছে। ফলশ্রুতিতে নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিবকে তার দাপ্তরিক পদ থেকে ওএসডি করা হয়।
গত ৩০ নভেম্বর এক অফিস আদেশে উপ-মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) মো. শহীদুল আলমকে ওএসডি করে চিঠি দেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান। তার স্থলে আরেক উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. রোমান চৌধুরীকে পদায়ন করা হয়।
এ ব্যাপারে নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক ও পদ্মা অয়েল কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন্স এন্ড প্লানিং) মো. আবু সালেহ ইকবালকে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। একইভাবে ওএসডি হওয়া উপ-মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) মো. শহীদুল আলমের মোবাইলেও বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু তিনিও রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে ক্ষুদে বার্তা দিলেও কোনো প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে নিয়োগ কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘নিয়োগের জন্য ৭৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা, ১০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা এবং একাডেমিক সনদে ১৫ নম্বর রাখা হয়। নিয়োগ নিয়ে সমালোচনা এড়াতে আগে থেকেই মৌখিক পরীক্ষা কম নম্বরের রাখা হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ২১ কর্মকর্তাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে নিয়োগ কমিটি। কোনো তদবির প্রাধান্য দেওয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে শুক্রবার বিকেলে কথা হলে পদ্মা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘নিয়োগ নিয়ে কোনো জটিলতা হয়নি। কর্মকর্তাদের মধ্যে কোনো অসন্তোষও নেই। মূলত অপ্রয়োজনীয় বাক্য বিনিময়ের কারণে ডিজিএম শহীদুল আলমকে সাময়িকভাবে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দপ্তর চালাতে গেলে সবগুলো ম্যানেজ করার জন্য এ ধরণের দাপ্তরিক পদক্ষেপ নিতে হয়। এসব পরবর্তীতে আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধমশা নিধনে পরীক্ষামূলক ওষুধ সংগ্রহ করছে চসিক
পরবর্তী নিবন্ধঅটো পাসের জেএসসিতে অনিয়ম