পদযাত্রা-শান্তি সমাবেশ মুখোমুখি, জেলায় জেলায় সংঘর্ষ

| রবিবার , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:২১ পূর্বাহ্ণ

ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির পদযাত্রার দিন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির অভিযোগ, আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিনা উসকানিতে হামলা করেছেন তাদের ওপর। এমনকি তাদের মঞ্চ দখল করে সমাবেশ করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করা হয়েছে, তারা বরং বিএনপির কর্মসূচিতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকেও বাধার অভিযোগ করেছে বিএনপি। পুলিশও বিনা কারণে হামলা করেছে বলে দাবি নেতাদের। খবর বিডিনিউজের। ভোলায় আহত ৮০ : শনিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে সহিংসতার খবর আসতে থাকে। সারাদিনে কয়েকশ নেতাকর্মীর আহত হওয়ার অভিযোগ করছে বিএনপি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮০ জন আহতের দাবি করা হয়েছে ভোলায়। দুপুর ভোলা সদর ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় হামলা হয় বলে অভিযোগ করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রাইসুল আলম। তবে এসব হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

লক্ষ্মীপুরে আহত শতাধিক : চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাটির সদর উপজেলার মান্দারি, হাজিরপাড়া, চরশাহী, কুশাখালী ও কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ও পাটোয়ারীরহাটসজ বিভিন্ন ইউনিয়নে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সংঘাতের খবর এসেছে। এতে শতাধিক নেতাকর্মী আহত হওয়ার দাবি করেছে বিএনপি। এদের মধ্যে সাতজনকে হাসপাতালে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন নেতারা। আওয়ামী লীগ অবশ্য তাদের শান্তি সমাবেশে বিএনপিজামায়াতের নেতাকর্মীদের পাল্টা হামলার অভিযোগ করেছে। এতে তাদের পক্ষে ১০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে বলে দাবি তাদের। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কমলনগরের চর কাদিরা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সোহেল বাঙালির অবস্থা আশঙ্কাজনক। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার মাথা কেটে গেছে। তিনি সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা কোনো প্রকার উসকানি ছাড়া লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কয়েকটি ইউনিয়নে অতর্কিত হামলা করেছে। ভাঙচুর করেছে বাড়িঘর।

জামালপুরে সংঘর্ষ, পুলিশের গুলি : দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়াপাল্টা ধাওয়ায় ঘটনা ঘটে সদর উপজেলার তিতপল্লা ইউনিয়নেও। পরিষদ পরিষদের সামনে এই ঘটনার পর পুলিশ ফাঁকা গুলি ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলায় বিএনপির অন্তত ১৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কোনো নেতাকর্মী বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেনি। বরং তারাই আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

যশোরে পুলিশের লাঠিপেটা : সদর উপজেলার পুলিশের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের লাঠিপেটার অভিযোগ এনেছে বিএনপি। বিকালে উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বাউলিয়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।

নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষ বিএনপিপুলিশে : নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ বিএনপির। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ বলেন, নেতাকর্মীরা পাঁচরুখী বাজার থেকে পদযাত্রা শুরু করে। বাজার থেকে কিছুদূর গিয়ে পদযাত্রা শেষ করার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। কিন্তু ঢাকাসিলেট মহাসড়কে নেতাকর্মীদের বাধা দিয়ে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। পরে রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে দশজন আহত হন।

নাটোরে বিএনপির মঞ্চ দখল : সদর উপজেলার ছাতনী এলাকায় মঞ্চটি তৈরি করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তবে তারা মঞ্চে পৌঁছানোর আগেই অন্য রাস্তা দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে সেই মঞ্চ দখল করে নেন বলে অভিযোগ বিএনপির। জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর ইউনিয়নের মাধনগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা হামলা করেছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে। যদিও ছাতনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল সরকার এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। তার দাবি, এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

এছাড়াও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁয়। নওগাঁয় ৫ বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া কঙবাজারের টেকনাফেও দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাল্টা কর্মসূচি দিয়ে আ. লীগ গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে
পরবর্তী নিবন্ধ১০ টাকার নিচে নামলো শৃঙ্খচরের সবজির দর