সদ্য ঘোষিত নগর বিএনপির আওতাধীন ওয়ার্ড কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভসহ মিছিল–সমাবেশ অব্যাহত আছে। সর্বশেষ গতকাল শনিবার বিকালে ৩৬ নং গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড কমিটিতে যোগ্যদের রাখা হয়নি দাবি করে এর প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পদবঞ্চিত ক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা। সমাবেশ থেকে ‘অবৈধভাবে আর্থিক লেনদেনের’ মাধ্যমে কমিটি দেওয়া হয়েছে দাবি করে নেতৃবৃন্দ বলেন, যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে চিহ্নিত আওয়ামী দোসরদের দিয়ে ঘোষিত কমিটি বাতিল করতে হবে।
জানা গেছে, বারিক বিল্ডিং মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বারিক বিল্ডিং মোড়ে থেকে শুরু হয়ে ৩ নং ফকিরহাট, নিমতলা, খালপাড় হয়ে ফকিরহাট রোড প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও বিএনপি নেতা মোহাম্মদ ইসহাকের পরিচালনায় বিক্ষোভ মিছিল–পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদ্য ঘোষিত গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নাজিম উদ্দিন, বিএনপি নেতা হাজী মো. হোসেন, মো. শাহ আলম, মো. শওকত মান্নান, মো. ইউসুফ, আবদুল মজিদ, জাহিদ হোসেন বাচ্চু, মো. সাগির, মো. জোবায়ের, আবদুল হকিম, যুবদল নেতা মো. কামাল উদ্দিন, মো. ইকবাল, মো. তুহিন, বন্দর থানা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. ইয়ার খান, ছাত্রদল নেতা মো. আকতার, হাসান রাসেল, মো. ইমরান, মো. আবু সাগর শাকিল ও শফিকুল ইসলাম লিটন।
বক্তারা বলেন, গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে ত্যাগী, কারা নির্যাতিত সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হারুনসহ যোগ্যদের রাখা হয়নি। ঘোষিত কমিটিতে দুঃসময়ের ত্যাগীদের রাখা হয়নি। আওয়ামী লীগ শাসনামলে ওয়ার্ড ও থানা বিএনপির সাবেক নেতাদের নামে বারবার মামলা হামলা হলেও বর্তমান কমিটির সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নাই।
আবু সাঈদ হারুন আজাদীকে বলেন, সমাবেশে মোহাম্মদ ইসহাক, শাহ আলম ও শফিকুল ইসলাম লিটনসহ বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের আন্দোলন সংগ্রামে কোনো ভূমিকা ছিল না। ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের সাথে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান, সাবেক এমপি এম এ লতিফ, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, শ্রমিক লীগের সভাপতি সফর আলী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল আলম চৌধুরী ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি সালাউদ্দিনের সাথে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের স্থির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাই ঘোষিত কমিটি আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী একটি পকেট কমিটি।
ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলের হাই কমান্ডের দিকনির্দেশনা অমান্য করে অবৈধ টাকার বিনিময়ে আন্দোলন সংগ্রামে পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে কমিটি বাণিজ্য করা হচ্ছে। বহু যোগ্য নেতা থাকার পরও চিহ্নিত পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর ও নিষ্ক্রিয় ব্যক্তিকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করা হয়েছে। এজেন্টের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গায় কমিটির পদ বাণিজ্য করে যাচ্ছে। অথচ দলের হাই কমান্ডের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে, আন্দোলন সংগ্রামের রাজপথের ত্যাগী, কারা নির্যাতিত ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীর সমন্বয়ে কমিটি করতে হবে।
সামাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ ৩৬ নং গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড কমিটিসহ চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আওতাধীন ঘোষিত ওয়ার্ড কমিটি গঠনে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিএনপির হাই কমান্ডের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। একইসাথে ঘোষিত কমিটি বাতিল করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের চাহিদার ভিত্তিতে ত্যাগী নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে কমিটি ঘোষণার দাবি জানানো হয়।