সরকারের ‘সময় শেষ’ উল্লেখ করে তাদেরকে ‘ভালো ছেলের মতো, সুবোধ বালক–বালিকার মতো’ পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার বিকালে নোয়াখালীর শহীদ বুলু স্টেডিয়ামে পদযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, আর কোনো সময় নাই। ওদের সময় শেষ। পরিষ্কার করে বলেছি, আবারও বলছি–ভালো ছেলের মতো, সুবোধ বালক–বালিকার মতো পদত্যাগ করেন, সংসদ ভেঙে দেন এবং একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে নির্বাচন করার জন্য নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করেন। একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে নতুন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিদের নিয়ে, সাচ্চা প্রতিনিধিদের নিয়ে একটা পার্লামেন্ট তৈরি হবে, তারা দেশ চালাবে। সরকার পদত্যাগ না করলে আন্দোলনে রাজপথেই ফয়সালা হবে উল্লেখ করে শ্লোগান তোলেন বিএনপি মহাসচিব। স্টেডিয়ামে হাজার হাজার নেতাকর্মী সমস্বরে জবাব দেয় ‘রাজপথে রাজপথে’। মির্জা ফখরুল বলেন, দফা এক, দাবি এক– সেটা কি? নেতাকর্মীরা বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। সরকার পরিবর্তনের আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্ববানও জানান তিনি।
দুপুর আড়াইটায় বিএনপির অঙ্গ সংগঠন কৃষক দল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল ও জাসাসের যৌথ উদ্যোগে পদযাত্রাপূর্ব এ সমাবেশ হয়। পদযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে লাকসাম সড়কের কাছে এসে শেষ হয়। সরকার হটানোর আন্দোলনে দেশের ছয় জেলা শহরে এ পাঁচ সংগঠনের ঘোষণা করা পদযাত্রার কর্মসূচি শুরু হলো এটির মাধ্যমে।
নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকার থাকলে ‘আওয়ামী লীগের ভাত নাই’ দাবি করে বিএনপি মহাসচিব আগামী নির্বাচন ‘শেখ হাসিনার অধীনে হতে হবে’ বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদেরের ‘এক দফা’র সমালোচনা করেন। ফখরুল বলেন, কী লজ্জা, কী লজ্জা কী আহ্লাদ, কী আবদার!
বৃহত্তর নোয়াখালীর সন্তান খালেদা জিয়ার প্রতি সরকারের নিপীড়ন–নির্যাতন ও কেন্দ্রীয় কারাগারের ছোট একটা স্যাঁতস্যাতে ঘরে আটক করে রাখার অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, আজকে তিনি গৃহবন্দি, চিকিৎসার জন্য তাকে বাইরে যেতে দেয় না। এ অবস্থা থেকে মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, আমরা করুণা চাই না। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাসায় দেখতে চাই না, তাকে বাইরে দেখতে চাই, নোয়াখালীতে দেখতে চাই। সবচেয়ে বড় কথা যেটা আমাদের ভোটটা আমরা নিজেরা দিতে চাই। বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্যাতনের অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই যারা অত্যাচার করছেন, নির্যাতন করছেন, আজকে লাকসামে যারা নির্যাতন করেছেন, অন্য জায়গায় যারা নির্যাতন করেছেন তারা সাবধান হয়ে যান। আর কোনো রকমের নিপীড়ন–নির্যাতন আমরা সহ্য করব না।
আগামীতে নির্বাচিত হলে রাষ্ট্র মেরামতের ঘোষিত ৩১ দফার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে পরিষ্কার করে বলেছি, আমরা কৃষকদের জন্য উন্নতির ব্যবস্থা করব, আমরা শ্যমিকদের জন্য উন্নতির ব্যবস্থা করব, আমরা তাঁতী, মৎস্যজীবী, কামার–যুবক–শ্রমজীবী মানুষের জন্য যা যা করব তা এই রূপরেখায় বলেছি।












