পতেঙ্গা সৈকতের অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ

আজাদীতে সংবাদ প্রকাশের জের

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৬ আগস্ট, ২০২২ at ৩:৪০ পূর্বাহ্ণ

দৈনিক আজাদীতে সংবাদ প্রকাশের পর নগরীর অন্যতম পর্যটন স্পট পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট করা অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পতেঙ্গা থানা পুলিশের একটি দল সমুদ্র সৈকতের গ্রিন লনে গড়ে তোলা অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে। বিকেল পর্যন্ত অধিকাংশ দোকান খুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত আউটার রিং রোড নির্মাণ করে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার বিচ এলাকাজুড়ে নতুন রূপ দেওয়া হয়। এর ফলে দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকল্পটির মাধ্যমে পতেঙ্গা হয়ে উঠে শহরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট। প্রতিদিন শত শত মানুষ এই পর্যটন স্পটে গিয়ে সময় কাটান। শুধু দিনেই নয়, গভীর রাতেও অসংখ্য মানুষ সাগর পাড়ে সময় কাটাতে যান। এরই মধ্যে সমুদ্র সৈকতে চোখ পড়ে একটি অসাধু চক্রের। তারা অবৈধ দোকানপাট নির্মাণের মাধ্যমে বিচ এলাকার সৌন্দর্য নষ্ট করতে শুরু করে। বিশেষ করে বিচের রাস্তার পাশের গ্রিন লনগুলোর প্রতিটিতেই গড়ে তুলতে শুরু করে অবৈধ দোকান। অল্পদিনের মধ্যে অসংখ্য দোকান গড়ে তোলা হয়। পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহায়তায় স্থানীয় ওই অসাধু চক্রটি দোকানঘর নির্মাণ করে দৈনিক এবং মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া দিতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে দৈনিক আজাদী গত ১ আগস্ট ‘রাতারাতি গড়ে উঠছে দোকান, নষ্ট হচ্ছে গ্রিন লনের ঘাস, হারাচ্ছে সৌন্দর্য’ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই সংবাদের জের ধরে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে পুলিশের একটি দল পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে এসে অবৈধভাবে নির্মিত দোকানের মালিকদের একদিনের মধ্যে দোকানগুলো সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দোকানগুলো সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করে অনেকে। যে সব ব্যবসায়ী দোকান নির্মাণ করেছিল তাদের অনেকেই নিজেরা নিজেদের দোকান ভেঙে নিয়ে যায়। পুলিশের একটি দল এসেও বেশ কিছু দোকান উচ্ছেদ করে। বৃহস্পতিবার রাতে সরজমিনে দেখা গেছে যে, গ্রিন লনে গড়ে তোলা অবৈধ দোকানগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে বিচের কাছে খুঁটি এবং সামিয়ানা টাঙ্গিয়ে কিছু ক্ষুদে ব্যবসায়ী দোকান চালাচ্ছে।
পতেঙ্গা থানা পুলিশ সৈকতে কোনো অবৈধ দোকান নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে। সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে কোনো ধরনের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট ইতিমধ্যে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছেন। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে কোনো ধরণের অবৈধ দোকান বা অন্য কোনো স্থাপনা থাকলে সেগুলোও উচ্ছেদ করা হবে। তিনি পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনা
পরবর্তী নিবন্ধনেপালকে মংলা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর