প্রত্যেক সম্প্রদায়ের বাৎসরিক কমপক্ষে এমন একটি আনন্দের উৎসব থাকে যাতে নতুন কাপড়–জুতা ইত্যাদি চা–ই চাই। কাজেই ক্রয়ের সামর্থ নেই এমন লোকও প্রয়োজনে অন্যের থেকে সাহায্য–সহযোগিতা গ্রহণ বা ঋণ নিয়ে হলেও এসব উৎসবে অংশগ্রহণ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদের মার্কেট এখনো জমজমাটভাবে শুরু না হলেও একথা বলতে দ্বিধা নেই যে, আগামী সপ্তাহ থেকে অধিকাংশ মার্কেট ক্রেতা সাধারণের সমাগমে নতুন রূপ ধারণ করবে। বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে কিছু বিক্রেতার বিবেক বিবর্জিত চাহিত মূল্যের কাছে সমাজের নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের অসহায়ত্বের চিত্র দেখে মর্মাহত না হওয়ার যেন উপায়ই নেই। বিশেষ করে গ্রামের সহজ সরল অনভিজ্ঞ ক্রেতাগণ এসব দোকানে ক্রয়ের মুখোমুখি হলে কয়েক গুণ বাড়িয়ে পণ্যের দাম চাওয়া হয়। বাজেটের তুলনায় তা অত্যধিক উল্লেখ করে দাম বলতে অনীহা প্রকাশ করলেও ক্রেতাকে বিভিন্ন কথার মারপ্যাচে ফেলে দাম বলতে বাধ্য করা হয়। এসময় ক্রেতার সঙ্গে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ব্যবহার করতেও দেখা যায়। ফলে অধিকাংশ ক্রেতা মান–সম্মানের ভয়ে চাহিত দামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কিছু কম টাকায় পণ্যটি ক্রয় করতে বাধ্য হয়। অথচ ফিঙড প্রাইস তথা এক দামের দোকানে একই পণ্যের দাম কয়েক গুণ কম বা অভিজ্ঞ ক্রেতা দর কষাকষির মাধ্যমে চাহিত মূল্যের তুলনায় অনেক কম দামে তা ক্রয়ে সমর্থ হয়। প্রত্যেক দোকানে পণ্যের দাম লিখিত সাইন বোর্ড অথবা পণ্যের গায়ে দাম লিখে রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সিংহভাগ দোকানদার অধিক মুনাফার লোভে তা পালনে বিন্দুমাত্র আগ্রহী নয়। অভিজ্ঞ মহলের ধারণা প্রত্যেক কাপড় বা পণ্যের গায়ে নির্ধারিত/মানানসই লভ্যাংশসহ মূল্য লিখে রাখার আইন বাস্তবায়ন করা হলে ক্রেতাগণের স্বার্থ অনেকাংশে রক্ষা পাবে ও ক্রয়ে অসমর্থদের সঙ্গে বিক্রেতাগণ মন্দ ব্যবহার করার সুযোগ পাবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সজাগ সুদৃষ্টির কারণে একদিকে ক্রেতাগণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে রক্ষা পাবে অন্যদিকে গরীব দুঃখী মানুষ তাদের সামর্থের মধ্যে পণ্য ক্রয়ের ফলে ঈদের আনন্দে অংশীদার হতে পারবে।