বর্তমান বাজারে ক্রেতাদের জন্য নতুন এক প্রতারণার ফাঁদ তৈরি হয়েছে পণ্যের গায়ে থাকা নির্ধারিত মূল্য মুছে ফেলা কিংবা স্টিকার লাগিয়ে বেশি দামে বিক্রি করা। এটি শুধু একটি অনৈতিক ব্যবসায়িক কৌশল নয়, বরং ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট উদাহরণ। কোনো পণ্যের গায়ে কোম্পানির নির্ধারিত মূল্য মুছে ফেলার অর্থ হলো ক্রেতাদের আসল তথ্য থেকে বঞ্চিত করা। ফলে তারা না জেনেই বেশি দাম পরিশোধ করতে বাধ্য হন। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, যেমন তেল, চাল, ডাল, ওষুধ, শিশুখাদ্য ও প্রসাধন সামগ্রীর ক্ষেত্রে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এতে সাধারণ মানুষের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে, পাশাপাশি বাজারে অস্বচ্ছতা বাড়ছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী, নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম নেওয়া ও মূল্য সংক্রান্ত তথ্য গোপন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন অনুযায়ী, এমন অনিয়ম ধরা পড়লে জরিমানা ও শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু দুঃখ জনকভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণে যথাযথ মনিটরিং না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন এই প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় ভোক্তাদের সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কোনো পণ্যের দাম সন্দেহজনক মনে হলে দোকানদারের কাছে প্রকৃত মূল্য জানতে চাওয়া উচিত। যদি গায়ের রেট মুছে ফেলার প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ জানানো যেতে পারে। পাশাপাশি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের প্রতারণার তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে অন্যদের সতর্ক করা যেতে পারে।
ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করা এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। ব্যবসায়িক নৈতিকতা নিশ্চিত করা শুধু ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব নয়, বরং এটি পুরো সমাজের জন্যই প্রয়োজন। প্রতারণামুক্ত বাজার নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।