পটিয়া-কর্ণফুলী-বোয়ালখালীতে যোগাযোগের নতুন সেতুবন্ধন

কালারপোল অহিদিয়া সেতু উদ্বোধন কাল

পটিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ৬ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ১৪ বছরের প্রতীক্ষার প্রহর পেরিয়ে এবার বহুল প্রতীক্ষিত পটিয়া কালারপোল অহিদিয়া সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামীকাল সোমবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় বহুল প্রতীক্ষিত এ কালারপোল সেতুসহ দেশের ১০১টি সেতু ভার্চুয়ালি একযোগে উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে ওইদিন সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থলে লক্ষাধিক জনতার সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও স্থানীয় এমপি সামশুল হক চৌধুরী। জানা যায়, পটিয়া উপজেলার কালারপোল অহিদিয়া সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে সেতুর দুই পাড়ের পটিয়া-কর্ণফুলী-বোয়ালখালীর হাজারো মানুষের। এ তিন উপজেলার মানুষের মধ্যে নতুন করে রচিত হচ্ছে যোগাযোগের এক অন্যতম সেতুবন্ধন। সোমবার সকাল ১০টায় গণবভনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন। এদিন কালারপোল সেতু নিয়ে ৫ মিনিটের একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শনীর কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে সেতুর শতভাগ নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় নির্মিত পটিয়াসহ সারাদেশের ১০১টি সেতুর মধ্যে পটিয়া কালারপোল সেতুটি অন্যতম। স্থানীয়রা এটিকে ‘মিনি পদ্মা সেতু’ হিসেবে দেখছেন।

এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেছেন, পটিয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। একের পর এক সড়ক ও সেতুর নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী উন্নয়ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শনিবার দুপুরে পটিয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়কালে সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে ওইদিন সেতু এলাকায় অনুষ্ঠানস্থলে লক্ষাধিক জনতার সমাবেশ ঘটবে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শিকলবাহা খালের উপর রয়েছে পটিয়া কালারপোল অহিদিয়া সেতু। খালের পশ্চিম পাড়ে কর্ণফুলী উপজেলা ও পূর্ব পাড়ে পটিয়া উপজেলা। দুই উপজেলার মানুষ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বোয়ালখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করা হবে। পাকিস্তান আমলে সেতুটি কংক্রিটের ছিল। ২০০৭ সালে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্গো জাহাজের ধাক্কায় সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে যায়। এরপর ২০১৪ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) অর্থায়নে একটি বেইলি সেতু নির্মাণ করলেও ২০১৫ সালে তা আবারো ভেঙে যায়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ব্রিজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে রানা বিল্ডার্স ও হাসান বিল্ডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কালারপুল সেতুর টেন্ডার গ্রহণ করে। সওজ কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ দেয়। প্রায় ১৮০ দশমিক ৩৭৩ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্তের এ সেতুর উভয় পাশে ৫৫০ মিটার সংযোগ সড়ক ইতোমধ্যে নির্মাণ হয়েছে। সেতুর নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

কোলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, কালারপোল অহিদিয়া সেতুর দুই পাড়ে শিল্পকারখানা ছাড়াও হাজার হাজার মানুষের বসতি। সেতু এলাকায় রয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রসহ অসংখ্য শিল্প কারখানা। সেতুটি চালু হলে মাদ্রাসা, মসজিদসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।

দোহাজারী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, এ সেতুটি এতদঞ্চলের জন্য একটি বড় আর্শীবাদ হয়ে উঠছে। এটি নির্মাণের ফলে দুপাশে বিভিন্ন শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে এবং এ এলাকায় নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের আর্থ-সামাজিক জীবন যাত্রার মানোউন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকনাফে আলীম পরীক্ষার্থীর উপর সন্ত্রাসী হামলা
পরবর্তী নিবন্ধনির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু