পটিয়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শ্বশুর বাড়ির লোকজন গৃহবধূ উর্মি আক্তারের (২০) মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও তার পিতা ও ভাইয়ের দাবি উর্মিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রহস্যের। গতকাল রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এদিকে পুলিশ জানিয়েছে মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরই জানা যাবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ।
নিহত উর্মি বোয়ালখালী উপজেলার করলডেঙ্গা গ্রামের অটোরিকশা চালক আমানত উল্লাহর মেয়ে। তিন বছর আগে তার বিয়ে হয় পটিয়ার মনসা নতুন হুজুরের বাড়ি এলাকার নির্মাণ শ্রমিক মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে।
নিহতের মা কুলছুমা বেগম বলেন, তিন বছর আগে ইসলামী শরীয়াহ্ মোতাবেক যৌতুক ছাড়া বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে মোজাম্মেলের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পরপরই তারা আমাদেরকে চাপ দিয়ে ১০০ বরযাত্রী ও ফার্নিচার আদায় করে নেয়। এরপর থেকে নানা সময়ে নানা যৌতুকের দাবিতে আমার মেয়েকে তার শাশুড়ি নির্যাতন করত। কিছুদিন ধরে আম–কাঁঠাল দেওয়ার জন্যও চাপ দিচ্ছিল। আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সে আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে নয়।
পিতা আমানত উল্লাহ্ বলেন, আমার মেয়ের ওপর দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক চাপ ছিল। স্বামী ও শাশুড়ি মিলে যৌতুক চেয়ে তাকে কষ্ট দিত। কয়েকদিন আগে আম–কাঁঠাল চেয়েছিল, কিন্তু আমার মেয়ে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এর মধ্যে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোজাম্মেল আমাকে ফোন করে জানায়, আমার মেয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে এবং তাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের স্বামী মোজাম্মেল হোসেন বলেন, আমি প্রতিদিনের মতো সকালেই কাজে বের হয়ে যাই। পরে বাসা থেকে ফোনে জানানো হয়, আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে।
পটিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) যুযুৎসু যশ চাকমা বলেন, আমরা খবর পেয়ে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ গিয়ে লাশ উদ্ধার করি। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, গৃহবধূ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে নিজের ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।