চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার ক্রসিং থেকে বাদামতল পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার অংশের সড়ক ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুটে প্রশস্ত করে স্ট্যান্ডার্ড টু লাইনে উন্নীত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় দশটি বাঁক সরলীকরণ হওয়ায় যানজটহীন সড়কে বেড়েছে গতি। যানজটমুক্ত ও বাঁক সরলীকরণ হওয়ায় চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের যাতায়াতরত দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রতিদিন লক্ষাধিক যাত্রী এর সুফল পাচ্ছে। এ সড়ক প্রশস্ত হওয়ার আগে আমজুর হাট, বাদামতল, শান্তির হাট, শিকলবাহা ক্রসিংসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকতো। বর্তমানে যানজটহীন প্রশস্ত এ সড়কে বেড়েছে গাড়ির গতি।
জানা গেছে, মহাসড়কের পটিয়া ক্রসিং থেকে উপজেলার বাদামতল পর্যন্ত প্রথম ধাপে ৬ কিলোমিটার সড়ক ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রশস্ত করে স্ট্যান্ডার্ড টু লাইনে উন্নীত করা হয়েছে। একইভাবে দ্বিতীয় ধাপে মহাসড়কের পটিয়া উপজেলার বাদামতল থেকে ইন্দ্রপুলের পশ্চিমাংশ পর্যন্ত ৫.৮ কিলোমিটার সড়কটিও প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রশস্ত করে টু লাইনে উন্নীত করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম–কঙবাজার আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান, চট্টগ্রাম–কঙবাজার মহাসড়কের এ ১২ কিলোমিটার রাস্তাটিতে অনেক বাঁক ছিল। বাঁক সরলীকরণ ও সড়ক প্রশস্ত হওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটা হ্রাস পাবে। যানজটমুক্ত পরিবেশে স্বাচ্ছন্দে গাড়ি চালাতে পারায় বিভিন্ন পরিবহনের চালকরা খুশি। তারা খুব কম সময়ের মধ্যে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হচ্ছেন।
দোহাজারী সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ক্রসিং থেকে বাদামতল পর্যন্ত ১৮ থেকে ৩৪ ফুট সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে রোড মার্কিং, সেভরন সাইন, গার্ড রোল (কালভার্টের পাশে) ও ট্রাফিক সাইন স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও সড়ককে টেকসই করার জন্য এমএস পাইপ ও আরসিসি প্যালাসাইডিং দ্বারা সড়ক রক্ষাপদ কাজ করা হয়েছে।
সড়ক প্রশস্তকরণে এর মধ্যে তিনটি প্যাকেজে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। পটিয়া শহরাংশ (ইন্দ্রপুল থেকে শ্রীমাই পর্যন্ত), বিজিসি ট্রাস্ট থেকে মক্কা পেট্রোল পাম্প ও মক্কা পেট্রোল পাম্প থেকে সাতকানিয়া মৌলভীর দোকান পর্যন্ত তিনটি প্যাকেজে সড়ক প্রশস্ত করার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ২২ মার্চ দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে। এই তিনটি কাজে দরপত্র মূল্যায়ন শেষে আগামী দুই মাসের মধ্যে সড়ক প্রশস্তকরণের কাজও শুরু করা হবে। এছাড়াও সাতকানিয়ার মৌলভীর দোকান থেকে কেরানী হাট পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা যায়।
জানতে চাইলে দোহাজারী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, মহেশখালীতে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টসহ মহেশখালী ও কক্সবাজারে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। এসব প্রকল্প শেষ হলে চট্টগ্রাম–কঙবাজার মহাসড়কের উপর যানবাহনের চাপ প্রচুর পরিমাণে বাড়বে। তাই চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মড়াসড়ক ছয় লাইনে উন্নীত করার কোনো বিকল্প নেই। তিনি আরো জানান, বৈদেশিক অর্থায়নে এ প্রকল্প সম্পাদনের জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সময় সাপেক্ষ, তাই সড়কটি ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুটে প্রশস্ত করে স্ট্যান্ডার্ড টু লাইনে উন্নীত করা হচ্ছে। এতে করে যানজট নিরসন হয়ে জনদুর্ভোগ কমবে।