পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হঠাৎ বেড়েছে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের রোগী। গতকাল বুধবার দুপুরে হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫০ শয্যার হাসপাতালের ইনডোরে ভর্তি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় একশ। এর মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।
ধারণ ক্ষমতার বাইরে এখানে ইনডোরে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন রোগীরা। এছাড়াও জনবল সংকট থাকায় বর্তমানে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে বেডের
বাইরেও বিভিন্ন রোগী হাসপাতালের বারান্দা, সিঁড়ি ও অলিগলির ফ্লোরে বেড বিছিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার ও বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে অনেক স্টাফ ও ডাক্তারের পদ খালি রয়েছে। যার কারণে সংকটের মধ্যেও চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষকে। এদিকে হাসপাতালে কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) ও ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ছেন রোগীরা। ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হাসপাতালে আসা মোহাম্মদ হোসেন নামের একজন জানান, বর্তমানে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে এ পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকা সত্যিই দুঃখজনক।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমা আকতার বলেন, পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ৭০% রোগী ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াজনিত রোগী। বিশেষ করে শিশুরা। এখানে আরো ৫০টি বেড বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সিবিসি ও ডেঙ্গু পরীক্ষাটা কেন হচ্ছে না আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে দ্রুত এর সমাধান করব।
হাসপাতালে কিছু ডাক্তার ও বেশ কিছু তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পদ খালি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেই কাজ করতে হবে। এর বাইরেও আমাদের এখানে আই ভিশন সেন্টার রয়েছে। যেখানে দুইজন টেশনিশিয়ান কাজ করেন। ২১জন কনসালটেন্ট রয়েছেন, যারা প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
হাসপাতাল ঘুরে আরো দেখা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে রোগ নির্ণয়ের সকল অর্থ লেনদেনের জন্য একটি টিকেট কাউন্টার খোলা হয়েছে। ওই টিকেট কাউন্টারে চিকিৎসার বিভিন্ন টেস্টের সরকারি খরচের টাকা জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করে প্যাথলজি কক্ষে গিয়ে যাবতীয় টেস্ট করানো হচ্ছে।
টিকেট কাউন্টারে কর্মরত রাসেল ও শ্রী ধাম জানান, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৫০–৬০ জন বিভিন্ন রোগী রোগ নির্ণয়ের জন্য কাউন্টারে টাকা জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করার মাধ্যমে তারা তাদের টেস্টগুলো করান।
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ইয়াছিন আকতার জানান, পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের জরুরি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়া হচ্ছে। এখানে প্রতিদিন ২০০–২৫০জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আইয়ুব নবী জানান, এখানে রোগীর চাপ প্রায় সময় বেশি থাকে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় আশপাশের উপজেলা থেকেও রোগীরা এখানে ইনডোর–আউডোর চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। যার কারণে এখানে সকাল থেকে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি দেখা যায়। নানামুখী সংকটেও আমরা রোগীদের সাধ্যমত সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করি।