চট্টগ্রাম–১২ পটিয়া আসনে উত্তপ্ত নির্বাচনী প্রচারের পর এবার চূড়ান্ত ভোটযুদ্ধে নেমেছে প্রার্থীরা। দক্ষিণের ৬ আসনের মধ্যে নির্বাচনী হাক–ডাক ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে হামলা মামলার পর কাল ৭ জানুয়ারি চূড়ান্ত লড়াইয়ে কে হাসবেন শেষ হাসি এটি দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ নবীন–প্রবীণ ভোটাররা। এবার ভোটের হিসাব নিকাশ পাল্টে দিতে পারে তরুণ প্রজন্মের ভোটাররা। তরুণ প্রজন্মের প্রায় লক্ষাধিক ভোটার তাদের ভোটাধিকার যে প্রতীকে ভোট দিবে সে প্রার্থীর জয় দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। পটিয়ায় মোট ভোটার ৩ লক্ষ ঊনত্রিশ হাজার ৪৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৭২ হাজার ২২৯জন ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ২০৪জন।
ভোটের মাঠে গিয়ে সরেজমিন বিভিন্ন ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পটিয়ায় লড়াই হবে দু’মুখো। ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও গত তিনবারের নির্বাচিত এমপি হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও আ’লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও দক্ষিণ জেলা আ’লীগের সভাপতি এবং প্রবীণ রাজনীতিবিদ মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর মধ্যে। গত ১৮ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে ছিল বেশ উত্তেজনা। হামলা–মামলা ও ভাংচুর এবং হুমকি ধমকিসহ দুইপক্ষের মধ্যে চলে আসছিল বেশ অস্থিরতা। যার কারণে এ আসনে জাতীয় ও স্থানীয় এবং বিভিন্ন অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছে চট্টগ্রাম–১২ পটিয়া আসনের নির্বাচনী উত্তাপ নিয়ে। যার কারণে ভোটারদের দৃষ্টি এখন এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীকে নিয়েই। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত মোমবাতি প্রতীকের প্রার্থী ও দলের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিনও। এ আসনে মোমবাতি প্রতীকের বেশ কিছু রিজার্ভ ভোট বা ভোট ব্যাংক রয়েছে। যার ফলে ভোটাররা মোমবাতি প্রতীককেও তৃতীয় প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও ঈগল–নৌকার পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাখছেন।
এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা, ঈগল ও মোমবাতি প্রতীক সহ সর্বমোট ৯জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নোঙ্গর প্রতীকের এম. এয়াকুব আলী, বাংলাদেশ ইসলামীক ফ্রন্টের চেয়ার প্রতীকের প্রার্থী কাজি মুহাম্মদ জসীম উদ্দিন, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ নুরুচ্ছফা সরকার, ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের প্রার্থী ছৈয়দ মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন জেহাদী ও তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী রাজিব চৌধুরী। পটিয়া উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দিন ভুইয়া জনি জানান, পটিয়ার ১০৮টি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করতে ৬ জন ম্যাজিষ্ট্রেট, ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটসহ পর্যাপ্ত আইনশৃংখলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩শ’জন পুলিশ, ৮ প্লাটুন বিজিবি, প্রায় ৯০জন সেনাবাহিনী, ৪ গাড়ী র্যাব, আনসার ভিডিপি সদস্য ১২৯৬জন। এরমধ্যে ২১৬জন অস্ত্রধারী এবং ১ সেকশান আনসার ব্যাটালিয়ান সদস্য। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ৩জন পুলিশ অফিসার ও দুইজন অস্ত্রধারী আনসার সদস্যসহ সর্বমোট ১২জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে বলে তিনি জানান। এর বাইরে প্রতিটি বাহিনী থেকে আলাদা স্টাইকিং ফোর্স কাজ করবে।