পক্ষ ত্যাগ করায় কোয়েপাড়ায় ঘটলো গোলাগুলির ঘটনা!

রাউজান প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৭ নভেম্বর, ২০২৫ at ৪:৫২ পূর্বাহ্ণ

রাউজানের বাগোয়ানের কোয়েপাড়ায় গত বুধবার রাতে গুলি ছুড়ে চারজনকে আহত করার নেপথ্যে কারণ ছিল পক্ষ ত্যাগ করে অন্য পক্ষে চলে যাওয়া। এই ঘটনা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে চলছিল স্থানীয় বিএনপি সমর্থিত দুই গ্রুপের মধ্যে চাপা উত্তেজনা।

এমন উত্তেজনার মধ্যে গত বুধবার রাতে যুবদলের একটি গ্রুপ আগের পক্ষ ছেড়ে অন্য পক্ষে যোগ দেয়ায় স্থানীয় বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মী তর্কবিতর্কে জড়ায়। এর জের ধরে গোলাগুলির ঘটনাটি ঘটে। এতে আগের পক্ষ ত্যাগকারী চার নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন।

গুলিতে আহত ও তাদের স্বজনরা গুলি ছোঁড়ার জন্য দায়ী করছে যুবদলের ইস্তিয়াক চৌধুরী অভি, আলতাফ চৌধুরী টুটুল, জনি চৌধুরী সহ ৭/৮ জনকে। যুবদলে এসব নেতা বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত করা) সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যারা গুলিতে আহত হয়েছেন তারা আগে হামলাকারীদের সাথে রাজনীতি করতেন। এখন পক্ষ ত্যাগ করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গোলাম আকবর খোন্দকারের পক্ষে চলে যাওয়ায় তাদের মধ্যে রেষারেষি চলে আসছিল। বুধবার রাতের ঘটনায় যারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন রাউজান উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ সুমন, ইউনিয়ন কৃষক দলের সহসভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল, ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম চৌধুরী, ইউনিয়ন যুবদলের সহ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল। আহতরা এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। খবর নিয়ে জানা যায় এই ঘটনায় এখনো রাউজান থানায় কোনো মামলা হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়রা জানান, অস্ত্র পরিচালনাকারী ও আহতরা এক সময় সকলেই বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। গ্রামের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতো অভি আর সুমন এক সাথে। কিছুদিন ধরে সুমনসহ তার কয়েকজন অনুসারী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর পক্ষ ছেড়ে সক্রিয় হন গোলাম আকবর খোন্দকার গ্রুপে। এতে ক্ষুদ্ধ হন অভিসহ তার অনুসারীরা।

গুলিতে আহত আবদুল্লাহ সুমনের স্ত্রী জোবাইদা বেগম ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বললে তারা এসব তথ্য দিয়ে বলেন, গুলি চালানোর ঘটনায় নেতৃত্ব দেয়া অভির সাথে আহত সবার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। তারা ছিল গ্রামের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা। এসবের মধ্যে ক্ষুব্ধ অভি গ্রুপ সম্প্রতি পক্ষ বদলকারী কয়েকজনকে মারধর করেছে। হারুন নামের একজনের ঘরও ভাঙচুর করেছে। এসব ঘটনায় সুমন তার কয়েকজন সমর্থককে নিয়ে গত বুধবার রাতে অভির কাছে প্রতিবাদ জানাতে যায়। ওই সময় অভিসহ তার সমর্থকরা বসা ছিল পাড়ার মসজিদ পুকুর ঘাটে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটি হয়। দুই পক্ষের চরম উত্তেজনার মধ্যে অভিসহ তার সমর্থকরা অস্ত্র বের করে। তাদের মধ্যে হাতাহাতির মধ্যে অভিসহ তার লোকজন গুলি ছুঁড়লে আহত হন সুমনসহ চারজন। রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভুইয়া ঘটনার সূত্রপাতের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। এছাড়া ঘটনার নেপথ্যে আরো কোনো রহস্য আছে কিনা পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধরাউজানের বিএনপি কর্মী হাকিম হত্যায় জড়িতরা ভাড়াটে খুনি