নয় দিন ধরে নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্র, মারধরের অভিযোগ

| শনিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২২ at ১২:৪৫ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত হারমাইন তাজফিজুল কোরআন মাদ্রাসার এক ছাত্রের খোঁজ মিলছে না নয় দিন ধরে। নিখোঁজ রফিকুল ইসলাম হাটহাজারীর ফতেপুর ইউনিয়নের মো. কবিরের ছেলে। এ ঘটনায় রফিকের বাবা গত সোমবার হাটহাজারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তবে গতকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তার কোনো হদিস মেলেনি। খবর বিডিনিউজের।

কবির বলেন, আমি শুনেছি শনিবার (৮ অক্টোবর) তাকে মাদ্রাসায় মারধর করেছিল হুজুররা। হয়ত ওই কারণে আমার ছেলেটা মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে গেছে। গত ১৩ অক্টেবর সকালে রফিক মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে দৌঁড়ে গিয়ে শাটল ট্রেনে উঠে যায়। তার দুই বন্ধু তার পিছু পিছু শাটলে উঠে ষোলশহর পর্যন্ত গিয়েছিল। কিন্তু ষোলশহর স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে রফিককে তারা আর খুঁজে পায়নি।

নিখোঁজ রফিকের মা নুরুন্নাহার বলেন, আমার ছেলে প্রায় ৪-৫ বছর ধরে এই মাদ্রাসায় পড়ে। রফিক ভর্তি হওয়ার এক বছর পরে আমি সেই মাদ্রাসায় রান্নাবান্না ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ নিই। আমি নিজেও সেখানে এক মাস আগে পর্যন্ত কাজ করেছি। কিন্তু অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় আমি এক মাস আগে ওই কাজ ছেড়ে দিই। এরপর থেকে প্রায়ই রফিক বলত, আমার কাজগুলো তাকে দিয়ে জোর করে করানো হচ্ছে। হাফেজি শেষে তার এখন শুনানি চলছিল। পড়ার জন্য তো তাকে মারতই, পাশাপাশি কাজের জন্যও তাকে মারধর করত। রফিক লুকিয়ে রাখলেও আমি তার জোব্বা উঠিয়ে সারা শরীরে মারের কালচে দাগ দেখেছি। তার বন্ধুরাও আমাকে বলেছিল, কাজ করার জন্য তাকে প্রায়ই হুজুরেরা মারে। ১৩ অক্টোবর সকালে আবার মারধর করলে রফিক মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে দৌঁয়ে পালিয়ে যায় বলে জানান তার মা নুরুন্নাহার।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমার ছেলেটা ছোটো। যে কাজ আমি নিজেই করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পয়েছি, সে কাজ সে কীভাবে করবে? আমার ছেলের কাছে কোনো টাকা ছিল না। আজ এত দিন ধরে সে কোথায় আছে, কীভাবে আছে, কোনো খোঁজ পাইনি।

মাদ্রাসা পরিচালনাকারী মো. ইয়াকুব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন মসজিদে ইমামতি করেন। ফোন করা হলে রফিকের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে হাটহাজারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। রফিক বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় আসার পথে নিখোঁজ হয়ে যায়।

মারধর ও কাজ করানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ইয়াকুব ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

হাটহাজারী থানার এসআই প্রদীপ চন্দ্র দে বলেন, আমরা তার পরিবারের সাথে কথা বলেছি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর নিচ্ছি। তবে এখনও তেমন কোনো তথ্য পাইনি। খোঁজখবর নেওয়া অব্যাহত আছে। মাদ্রাসায় গিয়ে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআইআইইউসির ইসলামিক স্টাডিজের মাস্টার্স প্রোগ্রামের ওরিয়েন্টেশন
পরবর্তী নিবন্ধষড়যন্ত্র মোকাবেলায় যুবলীগকে ভ্যানগার্ড হয়ে কাজ করতে হবে