মাত্র নয় দিনে আরও এক লাখ মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে গেল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রায় ৪০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১১ হাজার ৫৭৮ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১ লাখ ৩ হাজার ৯৮৯ জন। গত এক দিনে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে আরও ২২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের নিয়ে দেশে করোনায় মোট ১৭ হাজার ৮৯৪ জনের মৃত্যু হলো।
দেশে করোনার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ। তা ১০ লাখ পেরিয়ে যায় এ বছর ৯ জুলাই। এই তালিকায় আরও এক লাখ নাম যুক্ত হতে সময় লাগল মাত্র নয় দিন। মহামারীর ষোল মাসে বাংলাদেশে এত কম সময়ে আর কখনও এত রোগী শনাক্ত হয়নি। খবর বিডিনিউজের।
ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কঠোর লকডাউনের মধ্যে গত ১২ জুলাই দেশে প্রথমবারের মতো এক দিনে ১৩ হাজারের বেশি নতুন রোগী ধরা পড়ে। ১১ জুলাই এক দিনে রেকর্ড ২৩০ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আগের দিন শনিবার ২৯ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ৮ হাজার ৪৮৯ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছিল, মৃত্যু হয়েছিল ২০৪ জনের। এক দিনের ব্যবধানে দুই সংখ্যাই বেড়েছে অনেক। গত এক দিনে কেবল ঢাকা বিভাগেই ৪ হাজার ৮৫৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের ৪১ শতাংশের বেশি। চট্টগ্রাম বিভাগে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৮৬৩ জন রোগী। আর যে ২২৫ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ৬০ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। খুলনা বিভাগে ৫৪ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে আরও ৮ হাজার ৮৪৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ৩২ হাজার ৮ জন। বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৯ কোটি ছাড়িয়েছে। আর ৪০ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এ মহামারীতে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৩৮টি ল্যাবে ৩৯ হাজার ৮০৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৭২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৮৭টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ০৯ শতাংশ, যা আগের দিন ২৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ ছিল। দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬২ শতাংশ।
মৃত ২২৫ জনের মধ্যে ১ জনের বয়স ছিল ১০০ বছরের বেশি। ১১৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ৫২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৭ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। তাদের ১২৩ জন ছিলেন পুরুষ, ১০২ জন ছিলেন নারী। ১৮০ জন সরকারি হাসপাতালে, ৩২ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ১৩ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।