নৌকার পক্ষে কাজ করায় সাতকানিয়ায় দুই আ. লীগ নেতাকে পিটিয়ে জখম

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ১৪ মার্চ, ২০২২ at ৯:৩৬ অপরাহ্ণ

সাতকানিয়ার খাগরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করায় দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার লোকজন। আহতরা হলো শহীদুল ইসলাম (৩৫) ও নুরুল ইসলাম নুরু (৫৫)।

আজ সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের মাইজ পাড়া আছিয়ার পুকুর পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দুপুরে খাগরিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মজিদার পাড়ার মৃত মো. ইউসুফের পুত্র আওয়ামী লীগ নেতা শহীদুল ইসলাম ও একই এলাকার মৃত আবুল খাইয়েরের পুত্র নুরুল ইসলাম নুরু রিক্সাযোগে ভোর বাজার এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন।

তারা দুইজন মাইজ পাড়া আছিয়ার পুকুর পাড়ে পৌঁছার পর ২০-৩০ জনের সংঘবদ্ধ দল রিকশা থামিয়ে তাদেরকে নামিয়ে নিয়ে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে নুরু পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও শহীদকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে তারা।

এসময় খবর পেয়ে খাগরিয়া নুরু মার্কেট এলাকায় ডিউটিতে থাকা সাতকানিয়া থানার এএসআই মোবারক হোসেন দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর অবস্থায় শহীদুল ইসলামকে উদ্ধার করে প্রথমে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

আহত শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি আর নুরু মিলে রিকশা নিয়ে ভোর বাজারে যাচ্ছিলাম। মাইজ পাড়া আছিয়ার পুকুর পাড়ে পৌঁঁছার পর সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মুহাম্মদ জসীম উদ্দিন, খাইয়ের আহমদ, আমিন, হোসেন, গফুর, তারেক, তালেব, কাশেম, শাহজাহান, আকতার ও কামালের নেতৃত্বে ২০-৩০ জনের দল রিকশা থামিয়ে জোরপূর্বক আমাদের নামিয়ে ফেলে। এরপর নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কেন কাজ করেছি বলতে বলতে প্রথমে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে পার্শ্ববর্তী ঘর থেকে কিরিচ এনে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এক পর্যায়ে সাতকানিয়া থানার এএসআই মোবারক সাহেব এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পুলিশ এসে উদ্ধার না করলে তারা আমাকে মেরে ফেলতো। আমার অপরাধ, নির্বাচনে আমি নৌকার পক্ষে কাজ করেছি।”

তিনি আরো জানান, জসীম এতো দিন পলাতক ছিল। এখন এলাকায় এসে পুনরায় লোকজনকে সংগঠিত করে নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভূমিকা রাখা মানুষগুলোকে ধরে ধরে মারধর করছে।

খাগরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আকতার হোসেন জানান, জসীম এলাকায় এসে আবারো সংঘাত শুরু করেছে। নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করায় এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথি চৌধুরীকে মারধর করে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় স্বাক্ষী হওয়ায় ক্ষুব্দ হয়ে জসীম লোকজন নিয়ে শহীদ ও নুরুকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ জসীম উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি এলাকার বাইরে আছি। ঘটনার ব্যাপারে কিছু জানি না।”

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান জানান, ২০-৩০ জনের সংঘবদ্ধ দল পিটিয়ে ও কুপিয়ে শহীদ ও নুরু নামের দুইজনকে আহত করেছে। খাগরিয়ায় দায়িত্বে থাকা অবস্থায় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে শহীদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ইতিমধ্যে ৪ জনকে আটক করেছে।

ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা উৎসব আবাহনীর
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা