রাউজান নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকায় সন্ত্রাসীদের দফায় দফায় মারধর ও কুপিয়ে জখম করা ব্যক্তি যুবলীগ কর্মী হাসান (৪৫) মারা গেছেন। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকা সন্দেহে দুইজনকে পুলিশ আটক করেছে। বুধবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেছে বলে পুলিশ জানায়।
উল্লেখ্য, একদল সন্ত্রাসী বুধবার দিবাগত রাতে হাসানকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে স্থানীয় পলোয়ানপাড়ার কাছে একটি চরে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে দফায় দফায় পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। পরে মৃত ভেবে ফেলে যায়। এ সময় তার পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজতে গিয়ে চর থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্তের পর বাড়ি এনে বিকালে তাকে সমাহিত করা হয় বাড়ির কবরস্থানে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার হাসান এক সময় ওই এলাকার আওয়ামী লীগ ঘরানার সন্ত্রাসী মোবারকের সহযোগী ছিলেন। মোবারক এক দশকের বেশি সময় আগে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের হাতে নিহত হলে হাসান কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন। পরে এলাকায় এসে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সেকান্দরের সঙ্গী হন। ওই সময় একটি অপরাধমূলক ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে মেম্বার সেকান্দর তাকে দূরে সরিয়ে দিলে অনেকটা নিঃসঙ্গ হয়ে যান।
সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হাসান এলাকা ছেড়ে পালান। মাঝে মধ্যে গোপনে এসে পরিবারের সাথে দেখা করতেন। সর্বশেষ বুধবার রাতে হাসান বাড়িতে আসার খবর পেয়ে ওই এলাকায় বিএনপির পরিচয়ধারী কিছু সন্ত্রাসী তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘটায়। খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করে দুজনকে।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, অভিযানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন সাবেক এনডিপি ক্যাডার টিটু (বর্তমানে এক পা পঙ্গু), অপরজনের নাম সম্ভবত জাকির। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা
প্রক্রিয়াধীন আছে।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে টিটু বোয়ালখালীতে শ্বশুর বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। ওই সময় পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাকে ধরে এনে রাতে ক্রসফায়ারের নামে তার এক পায়ে গুলি করে। ওই সময় তার এক পা কেটে ফেলতে হয়। দীর্ঘ সময় জেল খেটে জামিনে বের হলেও টিটু সেই সময় বাড়িতে আসতেন না। এখন আবার নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন। এদিকে দুই সন্তানের জনক নিহত হাসান চৌধুরীহাট এলাকার বজল আহমদের ছেলে বলে জানা গেছে।