নোটিশের পর দফায় দফায় তাগিদ, তবুও জুনিয়রদের হোস্টেল ছাড়ছেন না তারা

চমেকের ইন্টার্ন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

ইন্টার্নদের জন্য আলাদা হোস্টেল সুবিধা রয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক)। কলেজের এমবিবিএস’র একটি ব্যাচ বর্তমানে ইন্টার্ন হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছে। নিয়মানুযায়ী মূল হোস্টেল থেকে ইন্টার্নদের হোস্টেলে তাদের স্থানান্তর হওয়ার কথা। কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত নোটিশও জারি করা হয়।

 

নোটিশে ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মূল হোস্টেলের সিট ছেড়ে তাদের জন্য নির্ধারিত ইন্টার্ন হোস্টেলে উঠার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষে মৌখিকভাবে আরো কয়েক দফা তাগিদ দিয়েছে চমেক প্রশাসন। এরপরও ইন্টার্নদের একটি অংশ মূল হোস্টেল ছাড়েনি। যারা এখনো মূল হোস্টেল ছাড়েনি,

তারা সবাই চমেক ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এর মাঝে সিনিয়র বেশ কয়জন শিক্ষকসহ চমেক অধ্যক্ষ স্বয়ং গিয়ে তাদের তাগাদা দেন। তারা ২/১ দিনের মধ্যে মূল হোস্টেল ছেড়ে নিজেদের (ইন্টার্ন) হোস্টেলে শিফট হওয়ার কথা বলেন। তবে কয়েক দফা তাগাদার পরও প্রশাসনের

নির্দেশনা তারা মানছেন না। ইন্টার্নদের একটি অংশ মূল হোস্টেল না ছাড়ায় বেশি বিপাকে পড়েছেন এমবিবিএস প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। তারা হোস্টেলে উঠতে পারছেনা। এমন ঘটনায় চরম বিরক্ত চমেক প্রশাসন। জানতে চাইলে চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার আজাদীকে বলেন, তাদের নোটিশ দিয়েছি।

পরে নিজে গিয়ে তাদের হোস্টেল ছাড়তে বলেছি। অনেকেই ছেড়ে গেছে। কিন্তু এখনো বেশ কয়জন রয়ে গেছে। যারা এখনো যায়নি, কয়েকদিনের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।

চমেক প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চট্টেশ্বরী সড়কে অবস্থিত চমেক মূল ছাত্রাবাসের দোতলায় শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা থাকেন। ২২টি কক্ষে এখানে সবমিলিয়ে ৭০/৮০ জনের মতো শিক্ষার্থী থাকেন। ৪র্থ বর্ষ শেষ হলেই নিয়মানুযায়ী তাদের মূল ছাত্রাবাস ছাড়তে হয়। আর তাদের সিট বরাদ্দ দেয়া হয় ইন্টার্ন হোস্টেলে।

কলেজ প্রশাসনের নোটিশের পর একটি অংশ মূল হোস্টেল ছেড়ে যায়। তবে অপর একটি অংশ রয়ে যায়। পরে চমেক অধ্যক্ষসহ সিনিয়র বেশ কয়জন শিক্ষক স্বশরীরে গিয়ে তাদের মূল হোস্টেল ছেড়ে ইন্টার্ন হোস্টেলে শিফট হতে তাগিদ দেন। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ পর্যন্ত একাধিকবার তাগিদের

পরও অন্তত ১০/১২ জন এখনো মূল হোস্টেল ছাড়েনি। মূলত ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃত্তরাই প্রশাসনের নির্দেশনা মানছেন না। বিশেষ করে জুনিয়রদের মাঝে কর্তৃত্ব দেখাতেই তারা মূল হোস্টেল ছাড়তে চান না।

চমেক ছাত্রলীগ দুটি ধারায় বিভক্ত। একটি গ্রুপ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের এবং অপরটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল’র অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে কলেজ প্রশাসনের নির্দেশনা না মানাদের মধ্যে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরাই রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

অবশ্য, মহিলা ইন্টার্নদের বড় একটি অংশও এখনো মূল হোস্টেল ছাড়েনি। সর্বশেষ রোববার (গতকাল) কান্তা ছাত্রী নিবাসে গিয়ে মহিলা ইন্টার্নদের নিজেদের হোস্টলে উঠার জন্য তাগাদা দিয়ে এসেছেন চমেক অধ্যক্ষ। বর্তমানে ৮৬ জন মহিলা ইন্টার্ন রয়েছেন বলে চমেক সূত্রে জানা গেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সাহেনা আক্তার বলেন, তাদের কয়েকদিন সময় দিয়েছি। এরপরও না গেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত সেই পুলিশ সদস্য বরখাস্ত
পরবর্তী নিবন্ধ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল