নগরের বাসা–বাড়ি থেকে ডোর–টু–ডোর ময়লা সংগ্রহে দীর্ঘদিন ধরে চলা নৈরাজ্য ও ইচ্ছেমতো টাকা আদায় রোধে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। এই নীতিমালার আওতায় বাসা–বাড়িগুলো থেকে ন্যূনতম হারে নির্ধারিত সেবামূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং নির্ধারিত এ সেবামূল্যের বাইরে কাউকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করতে দেওয়া হবে না।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে টাইগারপাস নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে চসিকের পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম তুলে ধরতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রথমে সতর্কতা, পরে চুক্তি বাতিল পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের উদ্দেশ্য নগরবাসীকে একটা সহনীয়, সুশৃঙ্খল ও নিরবচ্ছিন্ন পরিচ্ছন্নতা সেবা দেওয়া। চলমান জলাবদ্ধতার জন্য বাসাবাড়ি থেকে যত্রতত্র ময়লা ফেলা এবং অপরিকল্পিত আবর্জনা ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে তিনি বলেন, ড্রেন পরিষ্কারের পর আবার ময়লা জমে। কারণ অনেকে জানালা দিয়ে ময়লা ফেলে দেয়। আমরা চাই এই ব্যবস্থাকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে।
তিনি বলেন, বর্তমানে কিছু কোম্পানি মসজিদ–মাদ্রাসা থেকে ২০০০–৩০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। অথচ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে তাদের কোনো চুক্তি নেই। আরেকটি প্রতিষ্ঠান হাই কোর্টে রিট করেও কিছু এলাকায় কাজ বন্ধ রাখছে। আমরা আইনি পথে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিনি বলেন, নতুন সিস্টেমে প্রতিটি কোম্পানিকে শ্রমিকের বেতন, গাড়ির সংখ্যা ও এলাকা অনুযায়ী সক্ষমতা যাচাই করে অনুমোদন দেওয়া হবে। বিশেষ করে যাদের শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স আছে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আমি প্রতিদিন ৩০–৪০টি কল পাই, যেখানে বাসা থেকে ময়লা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়। মানুষ বলছে, টাকা দিচ্ছি, ময়লা নিচ্ছে না। তাই আমরা সঠিক প্রক্রিয়ায় এই সমস্যার সমাধান করতে চাই।
তিনি জানান, ইতোপূর্বে প্রায় ২০০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী ডোর–টু–ডোর কাজের জন্য নিয়োগ পেলেও যারা তিন মাস ধরে কাজে আসছেন না, আমরা ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ নীতিতে তাদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং নতুন শ্রমিক নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চসিকের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি এবং উপ–প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা।