নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি তিন গ্রাম পুলিশের

রাউজান প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৫ এপ্রিল, ২০২৪ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

রাউজানে হলদিয়া রাবার বাগানের আমুক্কের টিলার নির্জন এলাকায় এক ব্যক্তিকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিন গ্রাম পুলিশকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরখাস্ত করার অনুরোধ জানিয়ে হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ও থানার ওসি বরাবর দরখাস্ত দিয়েছেন।

জানা যায়, গত ১ এপ্রিল রাতে হলদিয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের সদস্য জুয়েল, শাহাজাহান, ওসমান একই ইউনিয়নের বাসিন্দা এরশাদকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দেখে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে ছয় হাজার টাকা আদায় করে তাকে ছেড়ে দেয়। পরদিন এরশাদকে আবার তারা ধরে নিয়ে যায় এবং বাগানের ভেতর আটকে রেখে তার স্ত্রীর কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। স্ত্রী সেলিনার দাবিতিনি ২ এপ্রিল ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলেন ভিজিএফের চাল আনতে। সেখানে জড়িত গ্রাম পুলিশের একজন তাকে জানান তার স্বামী তাদের একজন সহকর্মীকে রাতে থাপ্পর মেরেছে পালিয়েছিল এরশাদ। এ কারণে তাকে সকালে আবার ধরে এনে আটকে রাখা হয়েছে। অস্ত্র ও মাদক মামলা দিয়ে পুলিশে হাতে তুলে দেয়া হবে। ছাড়াতে চাইলে দিতে হবে এক লাখ টাকা। সেলিনা স্বামীকে তাদের হাত থেকে উদ্ধার করতে আনতে টাকা যোগাড় করতে বাপের বাড়িতে যান। সেখানে সেলিনাকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যান জড়িত গ্রাম পুলিশেরই একজন। সেখান থেকে কিছু টাকা যোগাড় করতে পারলেও সেলিনা বাকি টাকা যোগাড় করতে ছুটাছুটি করতে থাকেন। এসব ঘটনার মধ্যে রাউজান থানার আওতাধীন চিকদাইর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের একটি দল সন্দেহভাজন আসামিদের খোঁজে যাচ্ছিলেন বাগানের দিকে। ওই সময় বাগানের ভেতর অবস্থান করছিল কয়েকজন যুবক মোটর সাইকেল নিয়ে। তারা পুলিশ দেখে মোটর সাইকেল ফেলে দৌঁড়ে পালাতে থাকে। পুলিশ তাদের পিছু নিয়ে ভেতরে গিয়ে দেখে দিন মজুর এরশাদ সেখানে অসহায় অবস্থায় বসে রয়েছেন। তার মুখ থেকে ঘটনা শুনে পুলিশ তাকে নিয়ে আসে। জব্দ করে অজ্ঞাত পরিচয়ের যুবকদের ফেলে যাওয়া দুটি মোটর সাইকেল। পরে যেকোনো সময় এরশাদকে হাজির করতে হবে এই শর্তে এরশাদকে স্ত্রীর হেফাজতে দেওয়া হয়।

হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম বলেছেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখে ঘটনার সত্যতা পেয়ে দায়ী তিন গ্রাম পুলিশকে বরখাস্ত করতে উপজেলা ও থানা প্রশাসনের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে।

চিকদাইর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুল কাদের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ফাঁড়ির এএসআই হোসাইন হলদিয়া রাবার বাগানের ভেতর থেকে এরশাদকে উদ্ধার করেছে। রাউজান থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে এরশাদ একটি অভিযোগ দিয়েছেন। পরে তাদেরকে বরখাস্ত করার অনুরোধ জানিয়ে হলদিয়ার চেয়ারম্যান দরখাস্ত দিয়েছেন। বিষয়টি আরো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বৈসু উৎসব শুরু
পরবর্তী নিবন্ধবিক্রির জন্য রাখা শতাধিক কড়ি কাইট্টা উদ্ধার