জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার ‘নেভাল এনসাইন ১০ -স্মৃতিতে অম্লান বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপিত হয়েছে।
স্বাধীনতার রক্তাক্ত ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ধারক এবং বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ তারিখে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাথে জড়িয়ে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অম্ল্লান স্মৃতি। ৭১ সালের এই দিনেই মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা ও অসামান্য বীরত্বের সাথে লড়াই করে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান করেন। এদিন দেশব্যাপী বর্ণাঢ্য র্যালি, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, অসহায়দের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। এর অংশ হিসেবে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ এ সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও নাবিকদের র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। খবর বাসসের।
এসময় সহকারী নৌপ্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হকসহ নৌ সদরের প্রিন্সিপ্রাল স্টাফ অফিসারগণ, পরিচালকবৃন্দ, নৌ কর্মকর্তা ও সর্বস্তরের নাবিক উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামের বানৌজা ঈসাখান প্যারেড গ্রাউন্ড হতে সর্বস্তরের নৌসদস্যের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বানৌজা পতেঙ্গায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয় এবং দুপুরে চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের হাসপাতাল গেট সংলগ্ন এলাকায় দুস্থ, অসহায় এবং অস্বচ্ছল মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়। বাদ জুমা সকল নৌঅঞ্চলের মসজিদসমূহে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক ও আর্থ- সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সমুদ্র সম্পদের গুরুত্ব অনুধাবন করে ঐতিহাসিক ছয় দফায় নৌবাহিনী সদর দপ্তর চট্টগ্রামে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর একটি আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭৪ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে নেভাল এনসাইন প্রদান করেন এবং একযোগে বানৌজা ঈসা খানসহ ৩টি ঘাঁটি বানৌজা হাজী মহসীন ও বানৌজা তিতুমীর এবং ৩টি জাহাজ কমিশনিং করেন। এই দিনেই বঙ্গবন্ধু বানৌজা সুরমায় প্রথম ও একমাত্র নৌবাহিনীর মহড়া পরিদর্শন করেন। জাতির পিতার প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য হতে যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করা হয় এবং পরবর্তীতে ১০ ডিসেম্বর ১৯৭৬ বানৌজা ওমর ফারুক নামে কমিশনিং করা হয়। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতায় ১৯৭৪ সালে প্রণীত হয় সমুদ্রাঞ্চল বিষয়ক আইন ‘দ্য টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট-১৯৭৪’।
পাশাপাশি বানৌজা খিলক্ষেতে অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান এবং বানৌজা হাজী মহসীন অডিটোরিয়ামে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করা হয়।
খুলনায় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন ও বীর বিক্রম শহীদ মহিবুল্লাহর সমাধিস্থলে গার্র্ড অব অনার ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে খুলনার শিববাড়ী মোড়ে সর্বস্তরের নৌসদস্যের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।












