বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়নের। ড্র করলেও নিশ্চিত ছিল গ্রুপ সেরা হওয়া; কিন্তু বাংলাদেশ শুরুতেই ধাক্কা খেল গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবনের অভাবনীয় ভুলে। সেই ধাক্কা সামলে নেওয়া তো দূর অস্ত, গোল হজম করল আরেকটি। পরে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিলেও নেপালের বিপক্ষে হার এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিপক্ষে ২–১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা নেপাল, ‘এ’ গ্রুপের রানার্স আপ হয়ে সেমি–ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। ১৫ মিনিটে গোলরক্ষকের অবিশ্বাস্য ভুলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। আক্রমণ ক্লিয়ার করতে নিজেদের বক্সের ভেতর থেকে জোরালো শট নেন নেপালের এক খেলোয়াড়। বল এসে পড়ে মাঝমাঠের সার্কেলের কাছাকাছি থাকা শ্রাবনের পায়ে। ক্লিয়ার করার, সতীর্থকে পাস দেওয়ার যথেষ্ট সময় ছিল তার, কিন্তু বিস্ময়করভাবে তালগোল পাকান তিনি। সেই সুযোগে সমীর তামাং বল কেড়ে নিয়ে ফাঁকা পোস্টে জালে জড়িয়ে দেন। তিন মিনিট পরই বাংলাদেশ হজম করে দ্বিতীয় গোল। ডান দিক থেকে অবিনাশের ক্রসে নিখুঁত প্লেসিং শটে নিরঞ্জন ধামি লক্ষ্যভেদ করেন। এতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দুই গোল হজমের পর দুটি পরিবর্তন আনেন মারুফুল হক। বদলি নামেন মিরাজুল ইসলাম ও আসাদুল মোল্লা। প্রথমার্ধেই এক গোল পরিশোধ করে ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ৪৩তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোলটি করেন মিরাজুল। বঙের মধ্যে এই স্ট্রাইকারই ফাউলের শিকার হয়েছিলেন। শ্রীলংকা ম্যাচেও গোল পেয়েছিলেন মিরাজুল। দ্বিতীয়ার্ধে ভালো কয়েকটি আক্রমণ শাণালেও কাঙ্ক্ষিত গোল পায়নি বাংলাদেশ। একেবারে অন্তিম মুহূর্তে একটি হেড ফিরিয়ে নেপালকে জয়ের পথে রাখেন গোলরক্ষক জয়রাথ শিখ। গত আসরে ভারতের কাছে ফাইনালে হেরে রানার্স আপ হয়েছিল বাংলাদেশ। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভারত ও মালদ্বীপ আজ শুক্রবার মুখোমুখি হবে। এই দুই দলের মতো ‘বি’ গ্রুপ থেকে সেমি–ফাইনালে খেলার সুযোগ আছে ভুটানের সামনেও। খেই হারানো শ্রাবণকে দায় না দিলেও ওই গোলেই যে মানসিকভাবে দল পিছিয়ে পড়েছিল, ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় সেই হতাশা আড়াল করলেন না কোচ মারুফুল। ‘যখন খেলা শুরু করি, তখন সবকিছু আমাদের পরিকল্পনামাফিক চলছিল। যেহেতু আমাদের পরিকল্পনা ছিল, প্রথম ১০–১৫ মিনিট আমরা তাদেরকে ওপরে ওঠে খেলার সুযোগ দিব, কেননা, তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে চাইলে তাদের গোল পেতে হবে, আমাদের পরিকল্পনা ছিল মাঝমাঠ জমাট রাখা, এরপর আক্রমণে ওঠা। কিন্তু হঠাৎ একটা গোল হয়ে যাওয়ায় খেলোয়াড়রা মানসিকভাবে দমে যায়। এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। তবে আমরা ম্যাচ হেরেছি, কিন্তু ফাইনাল চ্যাম্পিয়নশিপ হেরে যাইনি।’