নেতা নির্বাচন হলো যেভাবে

নগর আ. লীগের প্রথম ওয়ার্ড সম্মেলন সরাসরি ভোটের সুযোগ পাননি কাউন্সিলররা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৯ জুন, ২০২২ at ১০:২০ পূর্বাহ্ণ

নগর আওয়ামী লীগের প্রথম ওয়ার্ড সম্মেলনে কাউন্সিলররা সরাসরি ভোটাধিকারের সুযোগ পাননি। গতকাল মঙ্গলবার ৪১ নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর বিকালে দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ চৌধুরী আবারো সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আলমের বিরুদ্ধে শক্ত তিন প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড়িয়ে যান।

কেন্দ্রীয় নেতাসহ নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজেদের মধ্যে সমঝোতার প্রস্তাব দেন। কিন্তু প্রায় দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত বাটারফ্লাই পার্কের রেস্টুরেন্টে ৪ সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. নুরুল আলম, মো. আলমগীর আলম, আবদুল হালিম ও শাকিল হারুণ একসঙ্গে বসেও সমঝোতায় পৌঁছতে পারেননি। দীর্ঘ সময়ে সমঝোতা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং পতেঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক টিমের সমন্বয়ক মিলে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে যে কমিটি ঘোষণা করা হবে তা মেনে নেয়ার আহ্বান জানান প্রার্থীদের। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন এ সময় ছালেহ আহমদ চৌধুরীকে সভাপতি এবং মো. নুরুল আলমকে আবারো সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেন।

এ সময় সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী গত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর আলম, আবদুল হালিম ও শাকিল হারুণ চাপিয়ে দেয়া কমিটির বিরোধিতা করেন। তারা ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন চান। এ সময় আ জ ম নাছির উদ্দীন তিন প্রার্থীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত তাদেরকে মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। তাদের তিনজনকে কমিটিতে ভালো পদে রাখারও প্রস্তাব দেয়া হয়।

শেষ পর্যন্ত আবদুল হালিম এবং শাকিল হারুণ অনেকটা নমনীয় হলেও মো. আলমগীর আলম সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী পদে অটল থাকেন। শাকিল হারুণ তাকে থানা কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হলে তিনি প্রার্থিতা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, থানা কমিটি হলে তখন তাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হবে।

অপর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আবদুল হালিমকে ওয়ার্ড কমিটির এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হবে বলে প্রস্তাব দিলে তিনিও নমনীয় হন। শেষ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক পদে শক্ত অবস্থানে থেকে যান মো. আলমগীর আলম। একান্তে বসে থানা কমিটির সমন্বয়ক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, নগর আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হোসেন, কামরুল ইসলাম ও রোটারিয়ান মো. ইলিয়াছ তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তারা ব্যর্থ হওয়ার পর আ জ ম নাছির তার সঙ্গে একান্তে ১০/১৫ মিনিট কথা বলেন। তাকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বলেন। এ সময় বিষয়টি নিয়ে আলমগীর আলম শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে কথা বলেন। একই সময়ে শিক্ষা উপমন্ত্রীর সঙ্গে আ জ ম নাছির উদ্দীনেরও কথা হয়। এক পর্যায়ে মো. আলমগীর আলমকে কমিটির এক নম্বর সহসভাপতি রাখা হলে শেষ পর্যন্ত তিনি তা মেনে নেন।

বেলা আড়াইটায় শুরু হওয়া দ্বিতীয় অধিবেশন প্রার্থীদের দেনদরবারে সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় শেষ হয়। শেষ পর্যন্ত কমিটি ঘোষণা করে আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা একে একে বের হয়ে চলে যান। সকাল ১১টায় শুরু হওয়া সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি। দুপুর দেড়টায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রবেশপথ বন্ধ রাখা অযৌক্তিক
পরবর্তী নিবন্ধসজাগ থাকুন, যাতে অপশক্তি মাথাচাড়া দিতে না পারে